হোম > ছাপা সংস্করণ

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কত দূর

মুশতাক হোসেন

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা হচ্ছে মিশ্র পদ্ধতির। মোটাদাগে চার ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে: সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও উন্নয়ন-সহযোগী গোষ্ঠী। সরকার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শুধু নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্যই দায়ী নন, সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, যার মধ্যে রয়েছে অর্থ ও জনবলের জোগান দেওয়া, সেটাও সরকারের দায়িত্ব।

কয়েকটি অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। অধিদপ্তরগুলোর মধ্যে রয়েছে: স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা, নার্সিং ও ধাত্রীসেবা এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মহাপরিচালক বা সমমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন আরও বেশ কিছু দপ্তর রয়েছে। রোগীর সেবা দেওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বিশেষ বিষয়ভিত্তিক হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক। অপরদিকে নগরাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের।

১৯৭৬ সাল থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন ও এনজিও মালিকানার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবায় যুক্ত হয়। ব্যক্তিমালিকানাধীন আনুষ্ঠানিক খাতে পাশ্চাত্য ও ঐতিহ্যগত (ইউনানি ও আয়ুর্বেদীয়) উভয় ধরনের সেবা রয়েছে। আনুষ্ঠানিক এ খাতে রয়েছে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ল্যাবরেটরি, ঔষধালয়। অনানুষ্ঠানিক খাতে রয়েছে প্রশিক্ষণবিহীন রোগীর সেবাদানকারীরা। ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে নিয়মকানুন মানানোর ব্যবস্থা একেবারেই দুর্বল। আনুষ্ঠানিক খাতের রোগীর সেবা প্রধানত শহরাঞ্চলে আর অনানুষ্ঠানিক খাতের রোগীর সেবা প্রধানত গ্রামাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত।

ক্রমান্বয়ে এনজিওগুলো স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ‘তৃতীয় খাত’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং তাদের ভূমিকা বাড়ছে। ১৯৯৭ সালে স্বাস্থ্য খাতের মোট খরচের ৬ শতাংশ এনজিওগুলো করত, যা ২০০৭ সালে এসে দাঁড়ায় ৯ শতাংশে। এখন এটা আরও বেড়েছে। সরকারের সঙ্গে এনজিওগুলোর অংশীদারত্ব রয়েছে অর্থায়ন, পরিকল্পনা, সেবা প্রদান, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রগুলোতে। এগুলো স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতিতে কাজে লেগেছে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা অতি মাত্রায় কেন্দ্রীভূত। পরিকল্পনাগুলো করা হয় মন্ত্রণালয় পর্যায়ে। স্থানীয় পর্যায়ে তেমন কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয় না। স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দুটির মধ্যে বিভক্ত। তারা আলাদাভাবে নিজ নিজ মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদনগুলো পাঠায়।


স্বাস্থ্যব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বেশ কতগুলো আইন ও অধ্যাদেশ রয়েছে, যার অনেকগুলো কয়েক দশকের পুরোনো। চিকিৎসক (দন্ত চিকিৎসকসহ) ও নার্সদের নিবন্ধনের জন্য আলাদা পরিষদ (কাউন্সিল) রয়েছে। কিন্তু তদন্ত ও শৃঙ্খলার ব্যাপারে তাদের কর্তৃত্ব দুর্বল।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টসের সর্বশেষ (২০১২) হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর একজন মানুষ ২৬ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার (১ ডলার=৮০ টাকা, ২০১২ সালে) স্বাস্থ্যের জন্য খরচ করে। তার নিজস্ব পকেট থেকে খরচ হয় ৬৪ শতাংশ, এটা এখন বেড়ে ৭০ শতাংশের বেশি হয়েছে। সরকার নাগরিকদের জন্য খরচ করছে ২৫ শতাংশের কম। প্রতিবছর বাজেটে সরকার যত টাকা বরাদ্দ করে, তার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ অব্যয়িত থেকে যায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের অযোগ্যতার কারণে। দুর্নীতির কারণে আরও একটি অংশ অপচয়ের শিকার হয়। সরকারি খরচের বাইরে সামান্য কিছু অংশ (শূন্য দশমিক ২ শতাংশ) বিমার মাধ্যমে সংরক্ষিত হয় আপৎকালে ব্যবহারের জন্য। এগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক উদ্যোগে করা হচ্ছে। কিছু সামাজিক উদ্যোগে কম খরচে রোগীদের সেবার ব্যবস্থা আছে। কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন বিমা প্রতিষ্ঠান রোগীদের সেবার জন্য ব্যক্তি ও গোষ্ঠীবিমা চালু করেছে। যদিও জনসংখ্যার খুব সামান্য অংশই এর আওতাভুক্ত।

দেশের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের জন্য ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অঙ্গীকার। যতটুকু রোগীর সেবার সরকারি ব্যবস্থা রয়েছে, তা-ও অনেক ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত ও অসন্তোষজনক। এ ঘাটতির সুযোগে সচ্ছল শ্রেণির চাহিদা মেটাতে ১৯৮০-এর দশক থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগীর সেবা খাতের বিস্তার ঘটতে থাকে। কিন্তু দেশের অধিকাংশ মানুষ এ ধরনের মুনাফাভিত্তিক ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগীর সেবা কিনতে অসমর্থ। ফলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।

বাংলাদেশে সরকারি ব্যবস্থায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর বিস্তৃতি ব্যাপক। তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো স্থাপনা ও মাঠকর্মী রয়েছে। শহরাঞ্চলে বড় বড় সরকারি হাসপাতাল তো রয়েছেই। যদিও বিগত দশকজুড়ে হাসপাতাল ও রোগীর শয্যাসংখ্যার প্রভূত উন্নতি ঘটেছে। কিন্তু জনবলসহ ওষুধ, যন্ত্রপাতি ও সরবরাহের ঘাটতি প্রায় প্রতিটি স্থাপনাকে সমস্যায় ফেলেছে।

দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় ৭৩৯টি হাসপাতাল রয়েছে, সরকারি স্থাপনা রয়েছে ২ হাজার ২৫৮টি, প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ২ হাজার ৩টি (কমিউনিটি ক্লিনিক বাদে), মাধ্যমিক ও তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে ২৫৫টি স্থাপনা। নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে ৫ হাজার ৩২১টি, নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগনির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে ৯ হাজার ৫২৯টি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ৫৪ হাজার ৬৬০টি, নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালগুলোতে মোট শয্যাসংখ্যা ৯১ হাজার ৫৩৭টি (২০১৯ সালে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিন)।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় কর্মরত মোট জনবল ৭৮ হাজার ৬১৯ জন, তবে মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ২৫৪ জন। এ হিসাবে নার্সদের সংখ্যা নেই। ২০২২ সালে সারা দেশে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল নিবন্ধিত এমবিবিএস চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার জন, ২০১৯ সালে বিডিএস চিকিৎসকের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৮৭৫ জন। ২০১৯ সালে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ হাজার ২০৮ জন। তবে করোনা মোকাবিলাকালে এ সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে।

২০১৯ সালে চিকিৎসক ও জনসাধারণের অনুপাত ছিল ১: ১৪৮৭, প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যায় ৬ দশমিক ৭৩ জন চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় ছিলেন ১ দশমিক ৫৫ জন। একই সংখ্যক মানুষের জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ছিলেন শূন্য দশমিক ৬০ জন, মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের) ছিলেন ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। একই জনসংখ্যা অনুপাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন রোগীর শয্যাসংখ্যা ছিল ৩ দশমিক ৩০টি, নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ছিল ৫ দশমিক ৫৩টি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধ সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে কেন্দ্রীয় ঔষধ ভান্ডার। হাসপাতালগুলোতে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহে মাঝে মাঝে বিঘ্ন ঘটে। ওষুধের অপচয়ের অভিযোগও পাওয়া যায় কোনো কোনো হাসপাতাল থেকে।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য জনবলের অপ্রতুলতা, প্রযোজ্য স্থানে নির্দিষ্ট দক্ষ জনশক্তির অনুপস্থিতি, জনবলের প্রাপ্যতায় এলাকা বিবেচনায় বৈষম্য ইত্যাদি লেগেই আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্টের অনুপাত হওয়া উচিত ১:৩:৫। অথচ বাংলাদেশে রয়েছে এর উল্টো চিত্র। সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছে চিকিৎসক (যদিও জনসংখ্যা অনুপাতে তা অনেক পিছিয়ে), আর সবচেয়ে কম সংখ্যায় রয়েছে টেকনোলজিস্ট। অন্যদিকে ৬২ শতাংশ চিকিৎসক কাজ করছেন ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালগুলোতে (২০১৩ সালের হিসাব)। চিকিৎসক, দন্তচিকিৎসক, নার্সদের অধিকাংশ কাজ করছেন শহর-নগরে।

অনানুষ্ঠানিক খাতে এক বিরাটসংখ্যক স্বাস্থ্যসেবা দানকারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আংশিক প্রশিক্ষিত অ্যালোপ্যাথিক রোগী সেবাদানকারী, প্রশিক্ষণবিহীন অ্যালোপ্যাথিক রোগী সেবাদানকারী, রয়েছেন আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এবং ধর্মীয় রোগীর সেবক। এরা স্বাস্থ্যব্যবস্থার মূলধারার অংশ না হলেও দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য, বিশেষ করে দুর্গম ও দূরবর্তী অঞ্চলে এরা প্রধান রোগীসেবক।

বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত মিলিয়েই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় রোগীর সেবা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের দায়িত্ব পালন করে থাকে, এর মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের কাজও রয়েছে। জনস্বাস্থ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ, গোদরোগ নির্মূল কর্মসূচি, ম্যালেরিয়া ও পরজীবী রোগনিয়ন্ত্রণ, কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, এইচআইভি/এইডস নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি ইত্যাদি। এসবে সাফল্যও আছে। এ কর্মসূচিগুলোতে জাতীয় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তা করে থাকে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দুটির দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখাগুলো স্বাস্থ্য উন্নয়নের কাজগুলো করে থাকে।

বাংলাদেশের রোগীসেবা ব্যবস্থায় কাঠামোবদ্ধ কোনো রেফারাল ব্যবস্থা নেই। ফলে সামান্য অসুখ নিয়ে যে কেউ সরাসরি বড় হাসপাতালে বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে চলে যেতে পারেন।
রোগতাত্ত্বিক ও জনমিতিক পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগসমূহের দ্বিগুণ বোঝা বহন করছে। এর সঙ্গে রয়েছে নব উদ্ভূত ও পুনরায় উদ্ভূত রোগসমূহ। তৈরি পোশাক কারখানা ও কনটেইনার ডিপোতে দুর্ঘটনাগুলো শ্রমিক-কর্মচারীদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে এনেছে। নতুন নতুন সমস্যা মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিকেও হালনাগাদ করা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়।

বাংলাদেশ ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেছে। এ ক্ষেত্রে ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতির অবদান রয়েছে। দেশীয় উৎপাদনকারীরা মোট ওষুধ বিক্রির ৭৫ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে; সে সক্ষমতা আরও বিস্তৃত করে বিদেশে ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে। তবে এই ওষুধের বড় অংশ উৎপাদন করে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। সরকারি খাতের বাইরে বিশৃঙ্খল ওষুধের বাজারে প্রায় ৬৪ হাজার অনুমোদিত ফার্মেসি এবং প্রায় ৭০ হাজার অ-অনুমোদিত ফার্মেসি ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই প্রায় সব ওষুধ বিক্রি করে থাকে। ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে অতিরিক্ত ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেওয়াটা সাধারণ ঘটনা, যা ওষুধের যুক্তিপূর্ণ ব্যবহারকে বাধার সৃষ্টি করে।

২০৩২ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়িত করে রোগীদের অতিমাত্রায় অধিক ব্যক্তিগত খরচ অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে আনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা অর্থনৈতিক কর্মকৌশল (২০১২-৩২) প্রণয়ন করা হয়। সমাজের ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক শ্রেণির জন্য বিমা দেওয়ার ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম প্রস্তাব করা হয়েছে এ কর্মকৌশলে। ২০ বছর মেয়াদি এ কর্মকৌশল প্রণয়নের পরে ১০ বছর পার হয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই। প্রথমে টাঙ্গাইলের ৩টি উপজেলায় এর পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন শুরু হয়। সম্প্রতি এটি বিস্তৃত হয়েছে টাঙ্গাইলের সব উপজেলায়। আগামী ১০ বছরে সারা দেশে এ সুরক্ষা কর্মসূচি বিস্তৃত করতে হলে কাজের গতি আরও বাড়াতে হবে। শহর-নগরে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বিরাট চ্যালেঞ্জ।

চ্যালেঞ্জ যা-ই হোক না কেন, তাকে অতিক্রম করতেই হবে। দেশের সব নাগরিকের জন্য প্রাথমিক ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি সম্ভব হবে না। হলেও তা ধরে রাখা যাবে না। কোভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতা আমাদের দেখিয়েছে যে স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে না পারলে সব স্থবির হয়ে পড়বে। সেটা তো আমরা চাই না। তাই আমাদের এগোতেই হবে।

লেখক: উপদেষ্টা, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ