হবিগঞ্জের লাখাইয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভের খবরে পেয়ে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তাঁর মেয়ে বামৈ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন সহকারী শিক্ষক মুমিনুল হক। তাকে একাধিকবার যৌন হয়রানিরও চেষ্টা করেছেন তিনি।
গত ১৬ মার্চ সকালে স্কুলের প্রাত্যহিক সমাবেশ চলাকালে অসুস্থ বোধ করলে ওই ছাত্রী স্কুলভবনের তৃতীয় তলার শ্রেণিকক্ষে বসেছিল। সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল। এ সময় সহকারী শিক্ষক মুমিনুল হক কক্ষে প্রবেশ করে অন্য শিক্ষার্থীদের বের করে দেন। তিনি ওই ছাত্রীর কাছে গিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন। একপর্যায়ে তার হাত ধরেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এবং আয়া গৌড়ী সেখানে গেলে মুমিনুল হাত ছেড়ে দিয়ে নিচে চলে যান।
পরে শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ও আয়া নিচে নামলে তিনি ওই ছাত্রীকে জাপটে ধরেন। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকারে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল করিমসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে মুমিনুল তাকে ছেড়ে দেন।
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ চৌধুরীকে জানানোর পরও তিনি মুমিনুল হকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষককের শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করে।
প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মুমিনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এটি ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। এর কোনো সত্যতা নেই।’
ইউএনও মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।