খুলনা শহরের কৈয়াবাজার এলাকায় সিটি করপোরেশনের ময়লা ফেলার স্থানে শূকর পালনের আড়ালে মাদক কেনাবেচা ও সেবনের অভিযোগ উঠেছে। শূকর পালন করায় এই এলাকায় সাধারণ মানুষ প্রবেশ করেন না। আর এই সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা এ স্থানকে তাঁদের ঘাঁটি বানিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গত কয়েক দিন কৈয়াবাজার সংলগ্ন রাজ বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ৪-৫টি শূকর ব্যবসায়ীদের দল সারা দিন শূকর চরান। আর সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় মাদক সিন্ডিকেটের আনাগোনা। এই ময়লার ভাগাড় এলাকা দেখাশোনার জন্য রয়েছেন কিছু দায়িত্বরত সুপারভাইজার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শূকর ব্যবসায়ী জানান, মাদক ব্যবসার নেতৃত্বে রয়েছেন সিটি করপোরেশনের দায়িত্বরত কিছু সুপারভাইজার কর্মকর্তা। তারাই শূকর মালিকদের কাছ থেকে ২০-৩০ হাজার করে টাকা নিয়ে তাঁদের ভাগাড় এলাকায় শূকর নিয়ে প্রবেশ করতে দেন। আর এসব শূকর ব্যবসায়ীরা পরে এখানে মাদকের ব্যবসা করেন।
এ বিষয়ে রাজবাঁধ এলাকার দায়িত্বরত সুপারভাইজার মো. আনোয়ার বলেন, ‘অভিযোগটি সঠিক নয়। রাতের বেলায় এখানে কি হয় সেটা আমি জানি না। কারণ রাতে এখানে আমি থাকি না।’ শূকর ব্যবসায়ী রবিন মণ্ডল বলেন, ‘আমি মালিকের কর্মচারী। এখানে আমি ছাড়া আরও ৪-৫ জন ব্যবসায়ী আছে। সবাই রাতে ও দিনে এখানে থাকে। রাতে আমি এখানে বেশ কিছু লোকের আনাগোনা দেখেতে পাই। তবে কেন তাঁরা আসে, সেটা বলতে পারব না।’
তাপস তরফদার নামে আর এক শূকর ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘এখানে মিলন, সাগর, সুকুমার ও সুবোধসহ আরও অনেকে থাকে। এদের আনুমানিক ৫০০-৬০০ শূকর রয়েছে। এখানে ১০-১৫ জন কর্মচারী শূকর দেখাশোনা করে। যারা শূকর দেখাশোনা করে তারা রাতে ওই মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গাঁজার সেবনের আসর বসায়।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক এক কর্মচারী বলেন, ‘রাতে এখানে মাদক সেবনেকারীদেরর মিলনমেলা বসে। আপনারা সন্ধ্যার পর আসলে দেখতে পারবেন।’
এ বিষয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. স্বপন হালদার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই। তবে আমি প্রধান প্রকৌশলী মো. আজিজ মোর্শেদ চৌধুরী স্যারের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। আজই ওইখানে আমাদের ফোর্স পাঠাব। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’