নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর পার হলেও নির্মাণ করা হয়নি নিজস্ব পৌরভবন। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ভাড়া করা একটি বাড়িতেই চলছে পৌরসভার দাপ্তরিক কার্যক্রম। পাশাপাশি স্থানীয়দের অভিযোগ, এতগুলো বছরে পৌরসভায় হয়নি কাঙ্ক্ষিত কোনো উন্নয়ন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৩ সালে ১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় লোহাগড়া পৌরসভার। প্রথম থেকেই ভাড়া করা একটি ভবনে চলে দাপ্তরিক কার্যক্রম। ২০১২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এই পৌরসভার মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন আশরাফুল আলম। দীর্ঘদিন ধরে একটানা নির্বাচিত মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করলেও পৌর এলাকার উন্নয়ন করতে পারেননি তিনি। এমনকি স্থানীয়দের অভিযোগ মেয়রকে অফিসে খুঁজে পাওয়া যায় না।
পৌরসভার আওতাভুক্ত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। ঈদগাহ-জয়পুর আরসিসি সড়কের লোহার রড বের হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। থানা থেকে হাসপাতালে যাওয়ার সড়ক খানা-খন্দে ভরা। নেই কোনো পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। বৃষ্টি হলেই কলেজ সড়কসহ সব সড়কেই পানি জমে। বড় বাজারের চারদিকে আবর্জনার স্তূপ। পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়েই ওঠেনি। রাতে পৌর এলাকার সড়কের দুপাশের ল্যাম্পপোস্টগুলোতে আলো জ্বলে না। এ রকম পরিবেশের ভেতর দিয়েই ৫০ হাজার পৌরবাসী নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়ে বসবাস করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম বলেন, ‘লোহাগড়া পৌরসভায় কোনো উন্নয়নই হয়নি। মেয়রকে অফিসে পাওয়া যায় না। অফিসে না পেয়ে মানুষ তাঁর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করে। সেখানেও তাঁকে পাওয়া যায় না।’
লোহাগড়া বাজারের ব্যবসায়ী নেতা শাহাদৎ হোসেন সাবু বলেন, ‘মেয়র কোথায় যে থাকেন তা কেউ বলতে পারেন না। পাঁচ বছরে তিনি দুইবার এলাকায় এসেছেন কি না সন্দেহ।’
মেয়রের বাড়ির সামনে থেকে ফিরে যাওয়া এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘বাড়িতে ঢুকে ডাকাডাকি করেও পাইনি মেয়রকে। এ নিয়ে সাতবার মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। মাত্র দুবার তাঁর দেখা পেয়েছি।’
এ বিষয়ে কথা বলতে মেয়র আশরাফুলের মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ দেখায়। তবে মেয়রের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি জানান, এবারের পৌর নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ আসতে পারে বলে ফোন বন্ধ করে রেখেছেন মেয়র।