কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লালনবাজার থেকে পান্টি বাজার গোলাবাড়ী মোড় পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়কটি খানাখন্দে ভরা। কিন্তু সংস্কারে জনপ্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোনো উদ্যোগ নেই। তাই দুর্ভোগ গতকাল শুক্রবার কমাতে স্থানীয় যুবকেরা স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কের গর্তগুলো সংস্কার করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলীয় যদুবয়রা, পান্টি, চাদপুর, বাগুলাট ও চাপড়া এই পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষ চলাচল।
উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। তবুও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে অচল হয়ে পড়েছিল সড়কটি। সড়কের মাঝের বড় বড় গর্ত সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমত পানি। আবার রোদ হলে ধুলাবালু। সব মিলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল।
সড়ক সংস্কারে অংশ নেওয়া যুবকেরা জানান, সড়কের জোতমোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে, জোতমোড়া দক্ষিণপাড়ার তিন রাস্তার মোড় ও হান্নান মোল্লার বাড়ির সামনে সৃষ্টি হয়েছিল বড় গর্ত। সেগুলো অনেকটা ছোট পুকুরের মত। বৃষ্টিতে হলেই জমত পানি।
যা এলাকার মানুষ ও যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিল। এরপরেও সড়কটি কেউ সংস্কার না করছিল না। তাই আমরা কয়েকজন মিলে স্থানীয় দুইটি ভাটা মালিকের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ভাঙা ইট ভিক্ষা নিয়ে সংস্কার করছি। এতে মানুষের দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকটা কমবে।
এ বিষয়ে সড়ক সংস্কারকারী যুবকদের মধ্যে রাসেল ও রনি বলেন, ‘পান্টি টু লালনবাজার সড়কটি দিয়ে ২৪ ঘণ্টাই যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ না হওয়ায় সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়। সড়কের তিনটি স্থানে পুকুরের মত গর্ত। সেগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা প্রায় ১০/১২ জন মিলে সড়কটি সংস্কার করেছি।’
ইজিবাইক চালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘জোতমোড়া বাজারের তিন রাস্তার মোড়ে বিশাল বড় গর্ত ছিল। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যেত। কিছু যুবক স্বেচ্ছায় গর্তটি সংস্কার করেছে। এখন ভালোভাবে চলাচল করা যাচ্ছে।’
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আশিকুর রহমান সাবান বলেন, ‘কাজটি এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কিন্তু করতে হলো পাড়ার যুবসমাজকে। আমি তাঁদের নিয়ে গর্ববোধ করি। তাঁদের মঙ্গল কামনা করি।’
সড়কটি স্থায়ীভাবে সংস্কারের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এখন টেন্ডারের অপেক্ষায়। আশা করছি খুব দ্রুতই ভোগান্তি দুর হবে।’