ছবি দেখে কী ভাবছেন? লাউ কি না ধন্দে আছেন? তবে ভালো করে দেখুন, এগুলো লাউ নয়, চালকুমড়াও নয়। দেখতে লাউয়ের মতো হলেও সবজিটি আসলে বেগুন। সবুজ রঙের এসব বেগুনের একেকটির ওজন এক থেকে দেড় কেজি। খেতেও বেশ সুস্বাদু। ব্যতিক্রমী এ সবজির কাগুজে নাম বারি বেগুন-১২।
উচ্চফলনশীল জাতের এই বেগুন চাষ করে সিলেটে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার মন্দিরখলার কৃষক সৈয়দুর রহমান। বারি-১২ বেগুনচাষি সৈয়দুর রহমান জানান, সিলেটের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চাষের জন্য তাঁকে বিনা মূল্যে এই বেগুনের বীজ ও সার দেওয়া হয়। সৈয়দুর বলেন, ‘আমাকে এ বেগুন চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন স্যারেরা। ইতিমধ্যে রোপণকৃত গাছে বেশ ভালো ফলন হয়েছে।’
সৈয়দুরের কথার সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া গেছে। এ বেগুনের চাষ নিয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে সিলেটের প্রত্যন্ত গ্রামে বাগান দেখতে যান কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহমুদুল ইসলাম। তা ছাড়া কৃষির সরেজমিন গবেষণা বিভাগ ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারাও বাগান পরিদর্শনে যান।
সরেজমিনে দেখা যায়, ২০ শতক ভূমিতে বারি-১২ বেগুনের চাষ করেছেন সৈয়দুর রহমান। প্রায় প্রতিটি গাছেই বড় আকারের বেগুন ঝুলছে। গাছে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই। যে কারণে বেশ খোশমেজাজেই দেখা যায় পরিদর্শনকারীদের। সৈয়দুর বলেন, ‘যেখানে অন্য বেগুনের দাম ২৫ টাকা কেজি, সেখানে প্রতি কেজি বারি বেগুন-১২-এর পাইকারি দামই ৪০ টাকা। আমি এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। বেগুন দেখতে গ্রামের লোকজন প্রতিদিনই ভিড় করছেন।’
সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ বছরই এই বেগুন চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধীরে ধীরে তা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’