আম চাষ অন্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভজনক হওয়ায় রাজশাহীর অনেক কৃষক এখন উন্নতজাতের আম বাগান তৈরিতে আগ্রহী হচ্ছেন। গত বছর থেকে চাষিরা বেশি আগ্রহী হচ্ছেন নতুন জাতের বারোমাসি আম কাটিমন চাষে। এর কারণ হিসেবে কৃষকেরা বলছেন, মৌসুমে সব আম বাজারে আসে। তবে কাটিমন জাতের আম মৌসুমে আসার পাশাপাশি মৌসুম ছাড়াও গাছে ধরে। এতে লাভের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সাকলাইন বলেন, গত বছর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে প্রায় ১২ একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কাটিমন আম চাষ করা হয়েছে। বাগানগুলোয় আশানুরূপ আম ধরেছে। বর্তমানে আমগুলো মৌসুমের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে স্থানীয় চাষিদের মধ্যে এই আম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। চাষিরা এবার বাণিজ্যিকভাবে বাগান করতে প্রায় ২০০ একর জমি নির্বাচন করেছেন।
জিউপাড়া ইউনিয়নের কানাইপাড়া গ্রামের আমচাষি শাখাওয়াত হোসেন মুন্সি বলেন, কাটিমন আম খুবই সুস্বাদু ও আঁশবিহীন। আর সঠিক নিয়মে পরিচর্যা করতে পারলে মৌসুম ছাড়াও বছরে আরও দুবার আম ধরেছে।
জিউপাড়া গ্রামের আমচাষি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বর্তমানে কাটিমন আম প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে তাঁর ব্যক্তিগত নার্সারিতে কয়েক হাজার কাটিমন জাতের চারা তৈরি করা হচ্ছে। কিছু চারা এবার নিজ জমিতে রোপণ করবেন। বাকি চারাগুলো পরিচিত কয়েকজন কিনতে চেয়েছেন।
চারা উৎপাদনকারী খালেদ হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে প্রতিটি কাটিমন আমের চারা ৩০০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমার নার্সারিতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫ লাখ আমগাছের চারা রয়েছে। এর মধ্যে কাটিমন জাতের চারা আছে প্রায় ৫০ হাজার। গত মাসে কাটিমন জাতের সব আমের চারা বিক্রি হয়ে গেছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূঁইয়া বলেন, বারোমাসি কাটিমন জাতের নতুন এই আম স্থানীয় চাষিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই আম মৌসুমে ধরে, মৌসুম ছাড়াও সমপরিমাণ ধরে। গত বছর থেকে অনেক কৃষক কাটিমন জাতের আম বাগান করছেন। আশা করা যায়, আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে কাটিমন আম চাষের ব্যাপক বিস্তার ঘটবে।