খুলনার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০০ মিটারের মধ্যে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। এ ভাটার ২০ মিটার দূরত্বে আমাদী তকিম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এর পাশে গড় আমাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অগ্রণী ব্যাংকের শাখা অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ কৃষি ব্যাংকের শাখা অফিস। দুই মাস ধরে কাঠ পুড়িয়ে এ ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট। কাঠ পোড়ানোর ফলে তৈরি হচ্ছে কালো ধোঁয়া।
ধোঁয়া ও ধুলাবালুতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। চোখ জ্বালাপোড়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীসহ শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়া নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ভাটার পাশে বসবাসকারী লোকজন।
ইটভাটাটির নাম মেসার্স এবিএম ব্রিকস। এর অবস্থান খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের জায়গীরমহল এলাকায়। ভাটাটির মালিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও আমাদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমির আলী গাইন। নদীর চর ও ফসলি জমি নষ্ট করে হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে ৩০ বছর ধরে ইট তৈরি হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) ২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। কিন্তু মেসার্স এবিএম ব্রিকস এই আইন লঙ্ঘন করেছে। এ ছাড়া এই ভাটার হালনাগাদ পরিবেশ ছাড়পত্রও নেই। ১৯৯২ সালে ভাটাটি স্থাপন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়রা নদীর চর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের পাশে ফসলি জমির ওপর গড়ে উঠেছে ইটভাটাটি। সেখানে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট। আরও দুই মাস ইট পোড়াতে কয়রা, পাইকগাছা ও আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খেজুর, নারকেল, শিরীষ গাছের গুঁড়িসহ বিভিন্ন গাছের কাঠ সংগ্রহ করে ভাটা চত্বরে জড়ো করে রাখা হয়েছে। নদীর চর থেকে মাটি কেটে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। শিশুদেরও কাজ করতে দেখা গেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের পরিচালক ইকবাল হোসেন বলেন, মেসার্স এবিএম ব্রিকসের পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। আইন অনুযায়ী ভাটাটি অবৈধ। হাসপাতালের পাশে ইটভাটা করার সুযোগ নেই। খুব তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মেসার্স এবিএম ব্রিকসের মালিক আমির আলী গাইন বলেন, কয়রায় তেমন শিল্পপ্রতিষ্ঠান নেই। সে কারণে ভাটায় কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়। আইন অনুযায়ী অনেক কিছুই তো করা যায় না। ম্যানেজ করে চলতে হয়।