বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বন্দরবাজারের ব্যবসায়-বাণিজ্যের খ্যাতি একসময় ছিল দেশজুড়ে। এখানকার বালাম চালের ঐতিহ্য কিছুটা জৌলুশ হারালেও এখানকার সব ধরনের মিষ্টি আজও এ অঞ্চলের মানুষের রসনা তৃপ্ত করে আসছে। বন্দর বাজারের মিষ্টিপট্টির ঐতিহ্যবাহী এক দোকান ‘শ্যামলাল মিষ্টান্ন ভান্ডার’।
বন্দর বাজারের এক সময়ের বিখ্যাত মিষ্টি ব্যবসায়ী প্রয়াত শ্যামলাল মজুমদার পাকিস্তান আমল থেকেই মিষ্টির ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। তাঁর দোকান পরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। শ্যামলাল মজুমদারের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে লক্ষ্মণ মজুমদার বাবার নামে ৩০ বছর ধরে মিষ্টির ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এ দোকানের সুস্বাদু ছানা, মিষ্টি, সন্দেশ ও দধি স্বাদে, গুণে ও মানে বানারীপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় বিখ্যাত। এ ছাড়াও রয়েছে রসমালাই, আমিত্তী, জিলাপি, নকুল ও বাতাসা।
জানা যায়, এখানে মিষ্টি পাইকারি ও খুচরা দুভাবেই বিক্রি হয়। শুক্রবার জুমার দিনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ঈদ, পূজা ও পার্বণে সবাই মিষ্টান্ন কিনতে বেশি ভিড় করেন দোকানে।
জানা যায়, এ দোকানে ছানা কেজি প্রতি ৫০০ টাকা, রসগোল্লার মধ্যে কালোজাম প্রতিটি ১০-২০ টাকা দরে বক্রি হচ্ছে, ছানার চমচম প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, রসমালাই ছোট-বড় প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, মিষ্টি দই প্রতি কেজি ১৮০, টক দই প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, আমিত্তী প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, জিলাপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, নকুল প্রতি কেজি ১৫০ টাকা ও বাতাসা প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শ্যামলাল মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী লক্ষ্মণ মজুমদার বলেন, আমরা দক্ষ কারিগর দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বিভিন্ন মিষ্টি পণ্য তৈরি করে থাকি। এখানে ভেজালমুক্ত মিষ্টান্ন পাওয়া যায়। দামেও অনেকটা সাশ্রয়ী। বানারীপাড়া ও এর আশপাশের উপজেলায় আমরা বড় বড় অনুষ্ঠানের মিষ্টি সরবরাহ করি।’
মিষ্টি ক্রেতা প্রভাষক মামুন আহমেদের সঙ্গে কথা হলে বলেন, ‘শ্যামলাল মিষ্টান্ন ভান্ডারের মিষ্টি খুবই সুস্বাদু। আমরা পরিবারের সবাই এখান থেকে মিষ্টি কিনি।’
বানারীপাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বানারীপাড়া শ্যামলাল ভান্ডারের মিষ্টির দোকান এখানকার ঐতিহ্যবাহী দোকান। এখানের মিষ্টি সুস্বাদু ও অতুলনীয়। আমাদের পরিবারের যে কোনো অনুষ্ঠানে এখান থেকে মিষ্টি সংগ্রহ করা হয়।’