প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ নারী দলের গত তিন সপ্তাহ কেটেছে কোয়ারেন্টিন আর প্রস্তুতি নিয়ে। আগামীকাল প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে নিগাররা সুযোগ পাবেন আরও ঝালিয়ে নেওয়ার। গত কদিনের অনুশীলনে নতুন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁদের।
মেয়েরা এবার প্রস্তুতি সেরেছেন ব্যাটের গ্রিপে একটি সেন্সর ডিভাইস ব্যবহার করে। এই সেন্সরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে কোচের মোবাইল ফোনে থাকা ‘স্টান্সবিম অ্যাপ’। অ্যাপটি একজন ব্যাটারের ব্যাটিং দক্ষতা পরিমাপ করে থাকে ১১টা প্যারামিটারের মাধ্যমে। এতে পরিমাপ করা যায় ব্যাটারের ব্যাটের গতি বা স্পিড, ব্যাট-বলের স্পর্শের সময়ে স্পিড, শট ইফিসিয়েন্সি, পাওয়ার, ব্যাক লিফট, ব্যাট সুইংয়ের অ্যাঙ্গেল, ডাউন সুইং, ফলো থ্রুতে স্পিড ইত্যাদি।
মূলত ব্যাটারের পাওয়ার হিটিং দক্ষতা বুঝতেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার। এ ধরনের প্রযুক্তি এখন ব্যক্তিগতভাবে অনেক খেলোয়াড়ই ব্যবহার করেন। ভারত-অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো দলগুলোও ব্যবহার করতে শুরু করেছে এটি। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রযুক্তিটির ব্যবহার করেছে সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ। তবে বিসিবির কোনো দলে এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার এটাই প্রথম। বাংলাদেশ নারী দলের পারফরম্যান্স বিশ্লেষক ও কোচ রাশেদ ইকবাল নিউজিল্যান্ড থেকে আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘এতে বোঝা যায় একজন ব্যাটার কত জোরে, কত দূরে মারতে পারছে। কতটা পাওয়ার হিটিং হচ্ছে, কত শক্তিতে মারছে। বুঝতে পারব পাওয়ার হিটিংয়ে ব্যাটারদের শক্তি ও দুর্বলতা কোথায়। এরপর পাওয়ার ও ব্যাটের স্পিড নিয়ে যদি কাজ করতে পারি, তাহলে ধীরে ধীরে ৫-১০ শতাংশ ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। বাংলাদেশের কোনো জাতীয় দলে এই প্রথম প্রযুক্তিটির ব্যবহার করছি আমরা।’
প্রযুক্তির সংযোজনে দ্রুতই পাওয়ার হিটিং সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, সেটির নিশ্চয়তা নেই। তবে ব্যাটিং টেকনিকে উন্নতি আনতে এ ধরনের প্রযুক্তি কিছুটা হলেও সহায়ক হতে পারে বলে মনে করেন বিসিবির এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) ম্যানেজার নাসির আহমেদ। তিনি বললেন, ‘হাতে যত তথ্য-উপাত্ত থাকবে, ততই সুবিধা। এই প্রযুক্তির ব্যবহার মানে আপনার কাছে বাড়তি কিছু তথ্য থাকছে।’
ছেলেদের বাংলাদেশ দলেও এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের চিন্তাভাবনা চলছে। বিসিবির ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘এটা ব্যাটের স্পিড ও পাওয়ার পরিমাপ করে। খেলোয়াড়কে তাৎক্ষণিক ফিডব্যাক পেতে সহায়তা করে। আমি এটা আমার খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি। বাজারে এ মুহূর্তে অনেক ধরনের ডিভাইস পাওয়া যাচ্ছে।’