‘আমার বুকটা শূন্য অইয়া গেল। আমার কী জানি নাই। ছেলেটা নিয়ে কত স্বপ্ন দেখেছি সব নিমেষে শেষ কইরা দিল। শরীফ আমার ছেলেকে ডাইকা আইনা নির্মমভাবে হত্যা করলে। আমি ফাঁসি চাই না, খুনের বদলে খুন চাই।’ এমন করেই বিলাপ করছিলেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার স্কুলছাত্র সুমনের মা মালেছা বেগম।
গত মঙ্গলবার সুমন মিয়াকে (৮) প্রতিবেশী শরীফ উদ্দিন নামে এক যুবক বাড়ির পাশেই খালপাড়ে নির্মমভাবে দা দিয়ে কুপিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করেন। সুমন মিয়া পূর্বধুরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নিহত সুমন মিয়া উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের পূর্বধুরাইল এলাকার জুয়েল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শরীফ উদ্দিনকে মঙ্গলবার বিকেলে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাঁর বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দাসহ আটক করে পুলিশ। সুমনের বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতেই হালুয়াঘাট থানায় হত্যা মামলা করেন।
বুধবার সুমনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মা সন্তান হারানোর কথা বলছেন আর মুর্ছা যাচ্ছেন। ‘আমি আমার ছেলেডার শেষ চেহেড়াও দেখতে পারি নাই। আমার ছেলেডার শরীর থাইকা মাথাডা দুইভাগ কইরা দিছে। আমি আর পারি না।’ এ কথা বলে তিনি বুক চাপড়াচ্ছিলেন আর আর্তনাদ করছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত সুমনের সঙ্গে শরীফের ১০ দিন আগে কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় শরীফ দা নিয়ে নিহত সুমনের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসেন। এ বিষয়ে সুমনের বাবা শরীফের বাবাকে বলার পর নিজেরা বসে বিষয়টি সমাধান করেন। কিন্তু ১০ দিনের মাথায় খালের ধারে সুমনকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন শরীফ।