হোম > ছাপা সংস্করণ

প্রচণ্ড গরমে ঈদযাত্রা, চিন্তায় লোডশেডিং

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যেই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপনের জন্য ছাড়ছেন রাজধানী। পথে তেমন ভোগান্তি না থাকলেও চিন্তায় ফেলেছে গরম আর ঢাকার বাইরে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং। বাস টার্মিনালে ভিড় থাকলেও লঞ্চে যাত্রী কম। ট্রেনে গতকালও যাত্রা ছিল ঝামেলাহীন।

আজ পবিত্র শবে কদরের ছুটি। সরকার নির্বাহী আদেশে ২০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ছুটি ঘোষণা করায় এই ঈদে টানা পাঁচ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। তবে রমজান মাস ৩০ দিনের হলে ছুটি আরও এক দিন বাড়বে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে আজ বুধবার থেকে। ঈদের আগে সরকারি অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গতকাল শেষ কর্মদিবস থাকায় দুপুর থেকেই রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে ঘরমুখী মানুষের ভিড় বাড়ে। ট্রেনে টিকিটবিহীন যাত্রী ওঠার সুযোগ না থাকায় চাপ পড়েছে বাসে। মহাসড়কে বাসসহ যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপও বেড়েছে।
রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সপরিবারে বাসে উঠেছেন কলেজশিক্ষক আরমান আহমেদ। গন্তব্য চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ। বললেন, ‘পথের দুর্ভোগ এড়াতে মঙ্গলবারই পরিবার নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি। অনেক গরম। গ্রামে গিয়ে ঘরে বিদ্যুৎ পাব, সেই ভরসাও নেই। ঈদের ছুটির পুরোটাই মনে হয় গরমে ভুগতে হবে।’ ঈদের পর নির্বিঘ্নে আবার ঢাকায় ফিরতে পারবেন, এমন আশা তাঁর।

আবুল হোসেন নামের এক বাসচালক জানান, দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ দেখা যাচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে যানবাহনের গতি ধীর হচ্ছে। বাকিটা পথ নির্বিঘ্নেই যাওয়ার আশা প্রকাশ করলেন তিনি।

এদিকে যাত্রীদের চাহিদাকে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কৌশল বদলেছে পরিবহনসংশ্লিষ্টরা। শেষ গন্তব্য পর্যন্ত ভাড়া দিতে হবে, এমন নিয়ম করে ভাড়ার তালিকা টাঙানো হয়েছে বাস কাউন্টারগুলোতে। গতকাল মহাখালী ও সায়েদাবাদে এ চিত্র দেখা গেছে।

মহাখালীতে দিনাজপুরের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৩০ টাকা। এই পথে যাত্রী যেখানেই নামুন, তাঁকে ৯৩০ টাকাই ভাড়া দিতে হবে। কাউন্টারের কর্মীরা যুক্তি দিচ্ছেন, ঈদে যাওয়ার সময় বাসভর্তি যাত্রী থাকলেও ফিরতে হয় ফাঁকা। তাই এই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে অন্য সময়ে গন্তব্য অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হয়।

রাজধানীর তিন আন্তজেলা বাস টার্মিনাল মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গাবতলীতে গতকাল কার্যক্রম শুরু করেছেন বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখনো ভাড়া বেশি নেওয়ার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ফুলবাড়িয়ায় বিআরটিসির বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-গোপালগঞ্জ পথে বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়ার বেশি আদায় করা হচ্ছে। গোপালগঞ্জের যাত্রীর চাপ বেশি হলে আসনসংকট দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে খুলনা ও পিরোজপুরের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বাসেও এই নিয়ম করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) আমজাদ হোসেন বলেন, যাত্রীরা মাঝপথে নামলে সেখান থেকে তো যাত্রী পাবে না। চট্টগ্রামের বাসে উঠে কুমিল্লায় নেমে গেলে কুমিল্লার ভাড়া নেওয়া সম্ভব নয়। সে জন্য যেখানে শেষ স্পট, সেখানকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

বিআরটিএর উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) হেমায়েত উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শেষ গন্তব্যের ভাড়া আদায়ের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। তবে তা যুক্তিহীন। কারণ, বাসের শেষ গন্তব্য খুলনায় হলে কেউ গোপালগঞ্জ নামলে তাঁকে খুলনার ভাড়াই দিতে হবে। এটা আগে থেকেই বাসমালিকেরা কার্যকর করেছেন।’ 

ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট
ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য ২৫ শতাংশ ‘স্ট্যান্ডিং টিকিটের’ (দাঁড়িয়ে যাওয়া) ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ সুযোগ থাকছে কেবল শোভন শ্রেণিতে। তবে এবার ট্রেনের ছাদে ওঠা নিষিদ্ধ করেছে রেলওয়ে। গতকাল কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সরোয়ার বলেন, আন্তনগর ট্রেন ছাড়ার দুই ঘণ্টা আগে স্টেশনের কাউন্টারে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।

টিকিট ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ কমলাপুর স্টেশনে ঢুকতে না পারায় গতকালও ট্রেনে ঈদযাত্রা ছিল ঝামেলাহীন। চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ও রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ছাড়া অন্য আন্তনগর ট্রেনগুলো মোটামুটি সময় মেনেই ছেড়েছে।

লঞ্চে যাত্রী কম
সদরঘাটে ঢাকা নদীবন্দর টার্মিনাল থেকে গতকাল চলাচল শুরু করেছে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস। তবে টার্মিনালে চিরচেনা সেই যাত্রীর চাপ নেই। ঈদ মৌসুমে যে টার্মিনালে তিলধারণের ঠাঁই থাকত না, সেটি গতকাল ছিল প্রায় ফাঁকা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই লঞ্চে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী কমে গেছে। রোটেশন অনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে চলাচলের জন্য ১৮০টি লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে।

৪১টি নৌপথের শতাধিক লঞ্চের প্রায় শতভাগ কেবিনই বুকিং হয়ে গেছে। তবে রোটেশনের বাইরে চলাচলকারী বিশেষ লঞ্চে উঠে কেবিন পাওয়া যাচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক কবির হোসেন বলেন, নিরাপদ যাত্রীসেবা দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে না। 

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) ও সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি।]

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ