সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়েছেন সেই দৃষ্টিহীন চয়ন তালুকদার। গতকাল রোববার প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চয়ন তালুকদার ৩ দশমিক ৯২ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছেন।
চয়ন তালুকদারের পরিবারের সদস্যরা জানান, জন্ম থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও চয়ন পড়াশোনার বিষয়ে মনোযোগী ছিল। ছোট বোন মৌসুমি তালুকদারের কাছ থেকে পড়া শুনে শুনে মুখস্থ করে সে। শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে পরীক্ষা এইচএসসি পাস করে। চয়ন পড়াশোনার পাশাপাশি গান গাইতেও ভালোবাসে।
চয়নের বাবা কৃষক নিতাই তালুকদার বলেন, ‘অভাবের সংসার কষ্ট করে সংসার চালিয়ে যাচ্ছি। ছেলে মেয়ে দুজনই এইচএসসি পাস করায় খুশি। কিন্তু ভবিষ্যতে কীভাবে আর পড়াব ভেবে পাচ্ছি না।’
চয়ন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি সিলেটে অনার্স পড়তে চাই। জগন্নাথপুর উপজেলায় অনার্স পড়ার সুযোগ না থাকায় খুব দুশ্চিন্তায় আছি। আর্থিক অভাব অনটনের সংসারে শহরে থেকে অনার্স পড়া ভাবতে পারছি না। ছোটবেলা থেকেই আমার খুব ইচ্ছা আমি লেখাপড়া শেষ করে নিজে কিছু করতে চাই। সে জন্য আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
চয়নের শ্রুতি লেখন মাজহারুল ইসলাম বলেন, চয়ন পাস করায় তাঁর চেয়ে আমি বেশি আনন্দিত। আমি সব সময় চয়নের পাশে থাকব।
জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদুল ইসলাম বলেন, চয়ন তালুকদারের পড়ালেখার আগ্রহ দেখে আমার তাকে শ্রুতি লেখকের ব্যবস্থা করে দিই। সে পাশ করায় খুব ভালো লাগছে। তাঁর ভবিষ্যৎ সাফল্য কামনা করি।
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, চয়ন তালুকদার জগন্নাথপুরের গর্ব। তাঁর স্বপন পূরণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।