হোম > ছাপা সংস্করণ

বিশেষ প্রকল্পের টাকা ‘লোপাট’

রুদ্র রুহান, বরগুনা

বরগুনায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প টিআর (বিশেষ) প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করে বেশির ভাগ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প এলাকার সুবিধাভোগীরা এ অভিযোগ তুলেছেন।

জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২০-২১ অর্থবছরে বরগুনা-২ আসনের (পাথরঘাটা-বামনা-বেতাগী) সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমনের অনুকূলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ২ লাখ ৫১ হাজার ৮০৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সংসদীয় এলাকার রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, মসজিদ-মন্দির সংস্কার, গভীর নলকূপ স্থাপন, পাবলিক টয়লেট সংস্কার, ঘাটলা নির্মাণসহ ৩২৩টি প্রকল্পের আওতায় সাংসদ রিমন এ টাকা বরাদ্দ দেন।

অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন দেখিয়ে ২০২১ সালের জুন মাসে বরাদ্দের টাকা তোলেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

প্রকল্প তালিকায় বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা লিনা বেগমের বাড়িতে নলকূপ স্থাপনের জন্য ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দেখা যায় লিনা বেগমের বাড়িতে কোনো নলকূপ নেই। জানতে চাইলে লিনা বেগম বলেন, ‘আমি একবার শুনেছিলাম আমাকে একটি টিউবওয়েল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার বাড়িতে কোনো টিউবওয়েল পাইনি।’

একই উপজেলার মন্নানের হাটে পাবলিক টয়লেটের নামে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করলেও কাজের ছিটেফোঁটাও হয়নি।

পাথরঘাটার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সিডর পয়েন্টের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য গ্রিল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে দেড় লাখ টাকা। শনিবার গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বাস্তবে গ্রিলের কাজের কোনো চিহ্ন নেই। সিডর পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এখানে কোথাও গ্রিলের কোনো কাজ হয়নি।

কাকচিড়ার জালিয়াঘাটা হাওলাদার বাড়ি মসজিদের ঘাটলা নির্মাণে ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই পুকুরে কোনো ঘাটলা নির্মাণ করা হয়নি। এ ছাড়া তানভির আকনের বাড়ির রাস্তা নির্মাণে ৫০ হাজার বরাদ্দ দেখানো হলেও সেখানে কোনো রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। তানভীর আকন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে রাস্তা নির্মাণ! এখানে তো কোনো কাজই হয়নি।’

দক্ষিণ কূপদোন খবির চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে হেমায়েতের বাড়ি পর্যন্ত পাকা রাস্তা মেরামতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। মাত্র ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও তিন ফুট প্রশস্ত ওই রাস্তায় আগেই ইট বসানো ছিল। নতুন কিছু ইট এনে রাস্তাটি কোনোমতে চলাচলের উপযোগী করে বরাদ্দের পুরো টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কূপদোন সুলতান মিয়া বাড়ি সংলগ্ন বেড়িবাঁধ থেকে চৌকিদার বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা পুনর্নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সেখানে পুরোনো মাটির রাস্তায় সামান্য কিছু মাটি ফেলে প্রকল্পের পুরো টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

তবে বেতাগী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, ‘এ উপজেলায় এমপির টিআরের বরাদ্দের প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ হয়েছে। আমি বেশ কিছু এলাকার কাজ দেখেছি। কাজ দেখে তারপরই বিল দেওয়া হয়েছে। তবে সব প্রকল্প আমার একার পক্ষে পরিদর্শন সম্ভব হয় না।’

পাথরঘাটা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোকসেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখানে যোগ দেওয়ার আগে এসব কাজ হয়েছে এবং বিলও তুলে নেওয়া হয়েছে।’

জানতে চাইলে সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় আমি এলাকায় প্রকল্প দিয়েছি। আমার জানামতে কোনো কাজ বাকি নেই। বরাদ্দের পুরো টাকারই কাজ করানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কাজ না করে বা যেনতেনভাবে কাজ করে টাকা তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই।’

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘টিআরের বরাদ্দ মূলত এলাকার সাংসদ দিয়ে থাকেন। কাজ না করে কেউ যদি অর্থ লোপাট করেন, আমরা তদন্ত করে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ