বুড়িচং উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন প্রার্থীরা। তাঁরা দেয়ালে পোস্টার লাগানো, মিছিল, মোটরসাইকেল মহড়াসহ বিভিন্ন ধরনের বিধিবহির্ভূত কাজ করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্বাচনী এলাকাগুলোতে প্রচার জমে উঠেছে। গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। তবে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, উৎসব পরিবেশ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আশঙ্কা বাড়ছে। কেননা, বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে প্রচারে বাধা এবং পোস্টার ছিঁড়ে ফেলারও অভিযোগ উঠেছে।
বুড়িচং সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ হরিপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী জয়নাল আবেদীনের পোস্টার দেয়ালে লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে পোস্টার লাগানো দেখা গেছে। অথচ নির্বাচনী আইনে কোনো বাড়ির দেয়ালে এমনকি রাস্তার সীমানা দেয়ালেও পোস্টার লাগানোর বিধিনিষেধ রয়েছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জয়নাল আবেদীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেয়ালে যে পোস্টারগুলো ছিল, সেগুলো তুলে ফেলা হয়েছে।’ দেয়ালে পোস্টার লাগানোর কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত গত সোমবার তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বলে জানান তিনি।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বাড়ির পাশে টাঙানো তাঁর সব পোস্টার ও ফেস্টুন রাতের আধারে কেটে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
অপর দিকে নির্বাচনী প্রচারে মিছিল নিষিদ্ধ থাকলের মানছেন না অনেক প্রার্থী। ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাসুদুজ্জামান মাসুম নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মিছিল নিয়ে ঘুরছেন। আবার এই মিছিলের ছবি ও ভিডিও নিজের ফেসবুকের পাতায় পোস্ট দিচ্ছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পদের প্রার্থীদের মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে মহড়া করতে দেখা গেছে।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে সব প্রার্থীকে নিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা ও আচরণবিধি বিষয়ক সভা করেছেন। প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপরও কিছু কিছু প্রার্থী আচরণবিধি মানছে না। তাঁদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে।’
কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে মুসলিমা জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে পাঁচটি মামলায় বুড়িচং উপজেলায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ইউপি নির্বাচনে আচরণবিধি বাস্তবায়ন নিশ্চিতে তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
সপ্তম ধাপে ৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ করা হবে। এ জন্য ১০৩টি কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইউপিগুলোর মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সবগুলোতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।