হোম > ছাপা সংস্করণ

কীটনাশক নয়, মাছি কমাবে বন্ধ্যা মাছি

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার

দেশে সামুদ্রিক মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরির প্রধান কেন্দ্র কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক। পাশাপাশি জেলার সমুদ্র উপকূলীয় উপজেলা ও বিভিন্ন দ্বীপে রয়েছে কয়েক শ শুঁটকিমহাল। এসব শুঁটকিমহালে মাছির উপদ্রব কমাতে ক্ষতিকর কীটনাশক মেশানোর অভিযোগও পুরোনো। দীর্ঘদিন ধরে কীটনাশকমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি উৎপাদনের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্টরা। তারই অংশ হিসেবে মাছি দিয়ে মাছি কমানোর কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

এর আওতায় গত পয়লা ডিসেম্বর মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়ায় দুই লাখ বন্ধ্যা মাছি ছাড়া হয়। এরপর ১৪ ডিসেম্বর তিন লাখ এবং ২৮ ডিসেম্বর আরও তিন লাখ বন্ধ্যা মাছি ছাড়া হয়। এর মাধ্যমে লিওসিনিয়া কাপ্রিয়া নামের এক প্রজাতির ক্ষতিকারক মাছির জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ পদ্ধতিতে কোনো এলাকায় বন্য মাছির কয়েক গুণ বন্ধ্যা মাছি ছাড়া হয়। এরপর বন্ধ্যা মাছির সঙ্গে ক্ষতিকর মাছির মেলামেশায় যে ডিম হয়, তা থেকে আর বাচ্চা ফোটে না। এভাবে ধীরে ধীরে সেই মাছির বংশবিস্তার কমে যায়।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বিকিরণ কীটতত্ত্ব ও মাকড়তত্ত্ব বিভাগ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে তারা। শহরের কলাতলীর সৈকত খনিজ বালি আহরণ কেন্দ্রে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয়েছে একটি গবেষণাগার ও প্রযুক্তিকেন্দ্র।

পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বিকিরণ কীটতত্ত্ব ও মাকড়তত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. এ টি এম ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘বিষমুক্ত, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি উৎপাদনের জন্য দেশের বৃহত্তম শুঁটকিপল্লি শহরের নাজিরারটেকে আরও বড় পরিসরে এ বন্ধ্যা মাছি অবমুক্ত করা হবে। আর এ বন্ধ্যাকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করেই মাছি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কক্সবাজারে শুঁটকির উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।’

ফয়েজুল ইসলাম আরও জানান, স্টেরাইল করা বন্ধ্যা মাছির সঙ্গে বন্য মাছি মিলিত হলেই তার শরীরের প্রজনন ইন্দ্রিয় কার্যক্ষমতা হারায়। এভাবে ধীরে ধীরে ক্ষতিকর বন্য মাছির বংশ কমে যায়। তবে ক্ষতিকর মাছি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতি মাসে দুবার করে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়। এরই মধ্যে চলতি মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো বন্ধ্যা মাছি অবমুক্ত করা হয়েছে সোনাদিয়া দ্বীপে।

বন্ধ্যাকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষতিকর মাছি নিয়ন্ত্রণে সফলতার তথ্য তুলে ধরেন সৈকত খনিজ বালি আহরণ কেন্দ্রের পরিচালক ড. মাসুদ করিম। তিনি জানান, উদ্ভাবিত পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কক্সবাজারে শুঁটকির উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাংসদ আশেকউল্লাহ রফিক বলেন, ‘এখানকার শুঁটকি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর অথবা কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।’

মাছ রোদে শুকানোর সময় লিওসিনিয়া কাপ্রিয়া নামের এক প্রজাতির ক্ষতিকারক মাছির আক্রমণে প্রায় ৩০ শতাংশ শুঁটকিই নষ্ট হয়ে যায়। এর মধ্যে দেশের বৃহত্তম শুঁটকিমহাল নাজিরারটেকেই নষ্ট হয় বছরে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকার শুঁটকি।

সোনাদিয়া দ্বীপে ২০০৭ সালে প্রথম বন্ধ্যা মাছি ছাড়া হয়েছিল। এতে কমে এসেছিল ক্ষতিকর মাছি। ১৪ বছর পর আবার নতুন করে বন্ধ্যা মাছি ছাড়া হলো।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ