বরিশালের হিজলা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মানুষের চলাচলের ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো। এটি উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নে মেঘনা নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। উন্নয়নবঞ্চিত এ গ্রামে রয়েছে শতাধিক পরিবারের বসবাস। যারা এখনো পায়নি আধুনিকতার ছোঁয়া।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় সাংসদ বিভিন্ন ইউনিয়নে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান থাকলেও সুলতানপুর গ্রামে নেই তাঁর কোনো নজর।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুলতানপুর গ্রামে যাওয়ার একমাত্র উপায় একটি দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো। যা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই গ্রামের মানুষের চলাচল করতে হয়। গ্রামের তিনদিকে বয়ে গেছে মেঘনা নদী। নেই কোনো স্কুল, মাদ্রাসা, রয়েছে একটি মাত্র মসজিদ। গ্রামের মানুষের জীবিকানির্ভর করে নদীতে মাছ ধরা কিংবা কৃষিকাজ করে। তারা কৃষিপণ্য নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে যায় নৌকা কিংবা ট্রলারযোগে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় কৃষকেরা উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে অধিক দামে বিক্রি করতে পারছেন না। ভালো সড়কব্যবস্থা না থাকায় বেশির ভাগ সময় রোগী নিয়ে ট্রলারযোগে যেতে হয় দীর্ঘ সময় পার হয়ে। ওই গ্রামের ছোট ছোট শিশুকে পার্শ্ববর্তী কুলারগাঁও গ্রামের স্কুলে যেতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে না পেয়ে ছোট ছোট নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের।
গ্রামের বাসিন্দা সুলাইমান বলেন, ‘হিজলা উপজেলার সবচেয়ে অবহেলিত গ্রাম হচ্ছে সুলতানপুর। আমাদের এমপি চাইলে এ গ্রামের উন্নতি করা সম্ভব।’ গ্রামের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি নতুন মেম্বার হয়েছেন। তাঁর ওয়ার্ডের সবচেয়ে অবহেলিত গ্রাম হচ্ছে সুলতানপুর গ্রাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় এমপি পংকজ নাথের কাছে আমার অবহেলিত গ্রামের প্রতি সুনজর দেওয়ার দাবি করছি। বাঁশের সাঁকো তুলে একটি সেতু নির্মাণের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জানানো হবে।’
হরিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৈফিকুর রহমান সিকদার বলেন, ‘সুলতানপুর গ্রামের প্রতি আমার নজর রয়েছে। আমি নতুন চেয়ারম্যান হয়েছি। ওই গ্রামে চলাচলের সাঁকোর স্থানে সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া শিগগিরই ওই গ্রামে ৩টি টিউবওয়েল বসানো হবে।’ হিজলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন ঢালী অবহেলিত সুলতানপুর গ্রাম সম্পর্কে বলেন, ‘ওই গ্রামের মেম্বার এসে আমাদের নিকট সমস্যার কথা জানালে আমরা ব্যবস্থা নিব। তা ছাড়া হিজলা নদী ভাঙন এলাকা আমরা উন্নয়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ওই গ্রামের উন্নয়নের জন্য আমাদের উপজেলা পরিষদের নজর থাকবে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ্র কবিরাজকে ফোন দিলে তিনি ব্যস্ততার কথা জানিয়ে ফোন কেটে দেন।