শীতজনিত কারণে লক্ষ্মীপুরে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। এদিকে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ১৫টি শয্যার বিপরীতে গত এক সপ্তাহে সদর হাসপাতালেই ১ হাজারের বেশি শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে ১০০ শয্যা লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আউটডোরে চিকিৎসার অপেক্ষায় অনেক শিশু রোগী। এর মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাই বেশি। গত ১০ দিন ধরে প্রতিদিনের চিত্রই প্রায় এমন।
কথা হয় শিশুর অভিভাবক কামাল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দুই দিন ধরে শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। তাই হাসপাতালে ভর্তি করতে এসেছি। কিন্তু কোনো শয্যা না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। প্রতি বিছানায় তিন-চার শিশুকে ভর্তি দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অনেককে মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে শিশুরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’
জেলার কমলনগর, রামগতি, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চিত্রও প্রায় একই রকম বলে জানা গেছে।
একই অভিযোগ করেন হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা সাইমুন হোসেনের মা কুলছুম বেগম।
সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ইসমাইল হাসান জানান, ঠান্ডার কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়ে চলেছে। সামনে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ে শিশুদের গরম কাপড় পরিধানসহ তাদের খাওয়াদাওয়ায় সতর্ক হতে হবে। শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফ্ফার বলেন, প্রতিদিন জেলা হাসপাতালের আউটডোরে সাত-আট শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু। দিনে গড়ে ৪০-৫০ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে শুধু এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১ হাজারের বেশি রোগী। অথচ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে মাত্র ১৫টি।
সিভিল সার্জন সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, এই সময়ে এসব রোগের প্রকোপ কিছুটা বাড়ে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।