দৈনন্দিন জীবনে প্রতিশ্রুতির উপস্থিতি অপরিহার্য। ব্যক্তি, পরিবার থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠান, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রও প্রতিশ্রুতির ওপর ভিত্তি করেই টিকে আছে। ব্যক্তি পরিবারের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, স্বামী স্ত্রীর কাছে এবং স্ত্রী স্বামীর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তেমনি মানুষ সমাজের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণ সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সরকারও জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মোট কথা জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে প্রতিশ্রুতির ভূমিকা অনস্বীকার্য।
ইসলাম প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। ওয়াদা রক্ষাকে বলা হয়েছে ইমানের আলামত। অপরদিকে ওয়াদা ভঙ্গ করাকে বলা হয়েছে মুনাফেকির লক্ষণ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা কৃত প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো। (সুরা মায়েদা: ১) মহানবী (সা.) বলেন, ‘মুনাফিকের লক্ষণ তিনটি...এর মধ্যে একটি হলো, অঙ্গীকার করে তা ভঙ্গ করা।’ (বুখারি)
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা সব সময় নিন্দনীয়। তবে এর স্তরভেদে গুনাহের মাত্রা বেশ-কম হয়। হাফেজ ইবনে রজব হাম্বলি (রহ.) বলেন, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা দুই প্রকার-
এক. প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় তা পূর্ণ করার সদিচ্ছাই না থাকা। এটি জঘন্যতম। তাই কেউ যদি বলে, আমি ইনশা আল্লাহ এ কাজটি করব, কিন্তু তা পালন করার ইচ্ছা মোটেও তার নেই, তাহলে তা মিথ্যা গণ্য হবে।
দুই. প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় তা পূর্ণ করার সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পূর্ণ করতে না পারা। এই অপরাধ লঘুতর। হয়তো আল্লাহ তার পক্ষ থেকে এ প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে দেবেন।
সুতরাং প্রতিশ্রুতি পূরণে আমাদের সর্বোচ্চ আন্তরিক হওয়া উচিত।
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক