শিমুল ফুল নিয়ে যুগে যুগে অনেক গল্প, গান ও কবিতা লিখেছেন কবি-সাহিত্যিকেরা। এর সঙ্গে যদি কোনো কল্পকাহিনীর ছোঁয়া লেগে যায়, তবে তা হয়ে ওঠে আরও হৃদয়স্পর্শী। এমনই কল্পকাহিনির ছোঁয়া লাগা শতবর্ষী শিমুল গাছ রয়েছে ত্রিশালে। এটি দেখতে এখন ভিড় বাড়ছে উৎসুক দর্শনার্থীদের।
শিমুল গাছটির বিশালতায় মুগ্ধ হবে যে কেউ। গাছটির আকৃতি বেশ বিস্তৃত। আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ তাদের মনের বাসনা পূরণ করার জন্য এখানে এসে রান্না করে মানুষকে খাওয়ান।
স্থানীয় বাসিন্দা পিয়াস খান বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে শিমুল গাছের দেখা মেলেনি। কিন্তু এ শিমুল গাছটি শত বছরের পুরোনো। গাছটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষ। অনেকে মনের বাসনা পূরণের জন্য মানত হিসেবে গরু, খাসি, মোরগ, জবাই করে রান্নাবান্না করে দর্শনার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে বিতরণ করেন।’
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কয়েকজন লোক রান্না করে লোকজনকে খাওয়াচ্ছেন। দর্শনার্থীরা এর সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। কেউ কেউ গাছের গোড়ায় দাঁড়িয়ে স্মার্টফোনে ছবি তুলছেন। গাছটির আকৃতি, বিশালতা, টকটকে ফুল ও সব কল্পকাহিনী জড়িয়ে থাকায় এখন লোকসমাগম বাড়ছে।
তবে ত্রিশাল উপজেলার সাখুয়া গ্রামের এই শিমুল গাছটির বয়স অজানা স্থানীয় মানুষের কাছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বলেন, ‘আমরা আমাদের কয়েক পুরুষের কাছে গাছটির বয়স জানতে চেয়েছি। তবে নির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারেনি।’
বয়োবৃদ্ধ সুরুজ মিয়া বলেন, ‘পূর্বপুরুষের মুখে শুনে এসেছি, এই শিমুল গাছের কথা। গাছটি নিয়ে অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবছর ফাল্গুন মাস এলে গাছে শিমুল ফুলের সমারোহে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় গাছটির। ওই সময় ফুলে ফুলে লাল হয়ে যায়। মৌমাছি, পাখিদের আনাগোনা বেড়ে যায়।’
আলী হোসেন নামে একজন বলেন, ‘গাছটি সম্পর্কে আমরা লোকমুখে অনেক কথা শুনেছি। অনেক বছর আগে গাছটি বিক্রি করা হয়। সে সময় বেশ কয়েকজন করাতি গাছটি কাটতে গেলে তাঁরা বাধার সম্মুখীন হন।’
স্থানীয় গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘লোকমুখে প্রচার পেয়ে গাছটি দেখতে এখন শত শত লোক ছুটে আসছে।’