হোম > ছাপা সংস্করণ

ছয় বছরে সন্ধান মেলেনি শতাধিক জেলের

সাইফুল ইসলাম, চরফ্যাশন (ভোলা)

বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে ট্রলার ও নৌকাডুবিতে গত ছয় বছরে শতাধিক জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ এসব জেলের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়। সাগর ও নদীতে নিখোঁজ জেলেদের লাশও পাওয়া যায় না। ফলে স্বজনেরা তাঁদের ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকেন।

চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ১১, ২০১৬ সালে ১৯, ২০১৭ সালে ৫, ২০১৯ সালে ৪৮, ২০২০ সালে ৯ ও ২০২১ সালে ৯ জন জেলে নদী ও সাগরে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হন। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক দেওয়া হয়। ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত নিখোঁজ ৬৬ জেলের মধ্যে ২২ জেলে পরিবারকে অনুদানের চেক দেওয়া হয়। তবে ২০১৮ সালে নিখোঁজ জেলে পরিবারকে কোনো অনুদান দেওয়া হয়নি। উপজেলা মৎস্য অফিস জানিয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে নিখোঁজ জেলে পরিবারের জন্য কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলায় ২০১৯ সাল থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ৬৬ জন জেলে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ও নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হন। অনেকের লাশের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই সময় নিখোঁজ জেলেরা চর মাদ্রাজ, আসলামপুর, মাদ্রাজ, জিন্নাগড়, আমিনাবাদ, আবুবকরপুর, আহম্মদপুর, ওসমানগঞ্জ, এওয়াজপুর, হাজারিগঞ্জ, জাহানপুর, রসুলপুর, চর মনিকা, চর কুকরিমুকরি, চর পাতিলা, নজরুলনগর, মুজিবনগর, ঢালচর, নুরাবাদ, নীলকমল, আব্দুল্লাহপুর, চরকলমী এলাকার বাসিন্দা।

নুরাবাদ এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে মো. জামাল (৩৭) ২০১৯ সালে সাগরে ট্রলার ডুবে নিখোঁজ হন। জাকির হোসেন বলেন, ‘সংসারের অভাব মেটানোর জন্য ছেলেটা দিন-রাত সাগরে পড়ে থাকত। কূলে ফেরার দুই দিন আগে আকস্মিক এক ঝড়ে তাদের ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা অন্য জেলেরা ফিরে এলেও আমার ছেলেসহ দুজন নিখোঁজ হয়।’

জেলে জামালের মতো একই এলাকার আবদুল জলিল (৪৫), শাহাজাহান (৪২), সুলতান মাঝি (৪৬), আফসার জমাদার (২৯), শাহাজাহান মাঝি (৪১), আব্দুল হাই (৩২), কবির (২৬), নূরনবী (২৮), নজরুল ইসলাম (৩৩) এখনো নিখোঁজ।

আবুদুল্লাহপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিক বিশ্বাসের ছেলে জামাল বিশ্বাস ও একই এলাকার মজিদ মুনশির ছেলে মো. আব্বাস নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ফিরে আসেননি। তাঁরা একই দিনে নিখোঁজ হন। ২০২০ সালের জুনে গভীর রাতে প্রচণ্ড ঝড়ে তাঁদের নৌকা ডুবে যায়। তবে ওই নৌকায় থাকা অন্য জেলেরা সাঁতরে পার্শ্ববর্তী চরে উঠলেও জামাল বিশ্বাস ও মো. আব্বাস নিখোঁজ হন।

ঢালচর মৎস্য ঘাটের আড়তদার বিসমিল্লাহ ফিশের মালিক আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, ঢালচর এলাকার ৯০ শতাংশ বাসিন্দা জেলে। এ এলাকার ১ হাজার ৬০০ জেলে নদী ও সাগরে মাছ ধরেন। এখানকার জেলেরা মৎস্য আড়তদারদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে নৌকা তৈরি করেন। এমনকি মাছ ধরার জাল থেকে শুরু করে চাল-ডাল কিনে দিতে হয়। ভাগ্য খারাপ হলে অনেকে ঝড়ের কবলে নৌকাসহ নিখোঁজ হন। সেই সঙ্গে হারিয়ে যায় দাদনের লাখ লাখ টাকা।

চর কুকরিমুকরি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, এই ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ২০০ জেলে মাছ ধরার কাজ করেন। তাঁরা দিন-রাত নদী ও সাগরে ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরেন। ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাসহ অনেক জেলে নিখোঁজ হন। পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ জেলেদের অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকেন।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, ট্রলার ও নৌকাডুবিতে নিখোঁজ জেলেদের লাশ কখনো পাওয়া যায়, আবার অনেকের খোঁজ মেলে না। নিখোঁজ জেলেদের পরিবারকে অনুদান দেওয়া হয়। চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় ৯০ হাজার জেলে রয়েছেন। নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ২৮১ জন। ঝুঁকি এড়াতে জেলেদের মধ্যে জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী লাইফ জ্যাকেট বিতরণসহ সর্তকতামূলক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ