গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজয় তাঁর কারণে হয়েছে—প্রধানমন্ত্রী এমনটি মনে করেন না বলে জানিয়েছেন আজমত উল্লা খান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল পাওয়ার পর গত ২৮ মে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকেছেন। আমার কথা শুনেছেন। তিনি আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। আমার কারণে আমি নির্বাচনে হেরেছি, এটা প্রধানমন্ত্রী মনে করেন না। আমি মনে করি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে, এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। তিনি আমাকে যে আদর, স্নেহ করেছেন, এটা অতুলনীয়।’
গত বৃহস্পতিবার সকালে মহানগরীর টঙ্গীতে নিজ বাসভবনে আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান।
আজমত উল্লা বলেন, ‘মানুষ নির্বাচনে পরাজিত হলে মুখ লুকায়। আমি পরাজিত হয়েও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, কথা বলছি। নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবাসে, তাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের কাছে পরাজিত হওয়ার কারণ সম্পর্কে আজমত উল্লা বলেন, ‘আমার নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন, দলের লোক বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এ কারণেই আমাদের ভরাডুবি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে সাংগঠনিক নির্দেশনা দিয়েছেন। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে, ওনার নির্দেশনা আমি বাস্তবায়ন করব। প্রধানমন্ত্রী আমার অভিভাবক হিসেবে তিনি আমাকে যে পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছেন, আমি সে অনুযায়ী আমার কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’
আজমত উল্লা বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। দলের ভেতরে বিশ্বাসঘাতক এবং মীরজাফররা যদি থাকে, তাহলে আগামী নির্বাচনেও তারা আমাদের ক্ষতি করতে পারে। আগামী নির্বাচনেও তারা একই ভূমিকা পালন করবে। আর যারা নিবেদিতপ্রাণ, যারা দলের জন্য কাজ করেছে, তাদেরও মূল্যায়ন করতে হবে। তাই ত্যাগী, সৎ এবং নিষ্ঠাবান কর্মীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী আওয়ামী লীগ গঠন করাই এখন আমার মূল লক্ষ্য।’
আজমত উল্লা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাচ্চা ও সাধারণ কর্মীরা সব সময় আমাদের পাশে ছিল, আছে। তাদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নাই। সাধারণ মানুষের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নাই। আমার জন্য সান্ত্বনার বিষয় হলো, আমি দুটি থানায় সভা করেছি। সেখানে একজন কর্মীও দাঁড়িয়ে বলেনি, আপনার জন্য আমরা নির্বাচনে হেরেছি। এটাও আমার বড় প্রাপ্তি।’
দল গোছানোর পরিকল্পনার বিষয়ে আজমত উল্লা বলেন, ‘আমি এখন থানা পর্যায়ে নেতা-কর্মীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ৯টা থানা কমিটির আলোচনা শেষ করেই আমি ৫৭ ওয়ার্ড পর্যায়ে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।’