কয়েক দিন ধরে পাঁচ বছর বয়সী মেহেদীর জ্বর। সঙ্গে সর্দি-কাশির আর শ্বাসকষ্ট। এ ছাড়া পেট খারাপও হচ্ছে। তিন দিন এ রকম হওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করানো হয়। তবু কমছিল না জ্বর। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না অভিভাবকেরা। এভাবে এক সপ্তাহ কাটার পর বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। সব দেখে চিকিৎসক বললেন, টাইফয়েড।
সিফারও জ্বর। সঙ্গে সর্দি-কাশির আর শ্বাসকষ্টও আছে। শিফার মা তাসফিয়া জানান, বুকে-পিঠে তেল মালিশ, চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধও খাওয়ানো হয়েছে। তবু কমেনি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
বিয়ানীবাজার উপজেলার ঘরে-ঘরে এমন অবস্থা। প্রায় প্রতিটি ঘরেই জ্বরের প্রকোপ। জ্বরের সঙ্গে আছে সর্দি-কাশি। কারও আবার গলাব্যথা।
চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতেও প্রতিদিন বাড়ছে জ্বর, সর্দি, কাশি, গায়ে-হাতে ব্যথা নিয়ে আসা রোগীর ভিড়। চিকিৎসকেরা বলছেন, জ্বর-সর্দি-কাশির তীব্রতা থাকছে চার থেকে ১০ দিন। জ্বর সেরে গেলেও শুকনো কাশি, দুর্বলতা ভোগাচ্ছে অনেককে। অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই এ ক্ষেত্রেও এক সঙ্গে পরিবারের একাধিক সদস্য জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। অনেকের গলা ব্যথাও হচ্ছে। তাই রোগ ভালো না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে আলাদা করে অন্তত ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এ ছাড়া ঘরে ও বাইরে অবশ্যই মাস্ক পরার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন তাঁরা।
বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু ইসহাক আজাদ বলেন, হঠাৎ করেই কয়েক দিন ধরে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সীদের মধ্যে জ্বর-কাশি, হাঁচি-সর্দির উপসর্গগুলো বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সচেতন থাকতে হবে।
এ কর্মকর্তা বলেন, জ্বর কিংবা ঠান্ডা মানেই করোনা নয়। তবে এই সময়ে গলাব্যথা, খুসখুস ভাব, নাক বন্ধ বা অনবরত হাঁচি, মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ, দুর্বল লাগা ও ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিলে চিকিৎসা করাতে হবে। উপসর্গে সাইনাস, টনসিলে প্রদাহ হতে পারে। সতেজ ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে আদা-লবঙ্গ-এলাচ-লেবু চা, তুলসী পাতা, মধু ও লেবুর রসসহ দেশীয় ফলের রস পান করার জন্যও বলেছেন।