নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে রাতে চলাচল করছে বালুবাহী বাল্কহেড। সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত বাতি বন্ধ রেখে ধীরগতিতে মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চালান সুকানিরা। এসব বাল্কহেডের বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এদিকে ডাকাতিয়া নদীতেও চলছে এই বালুবাহী বাল্কহেডের দাপট। গতকাল সোমবার ভোরে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় মাটিবাহী ট্রলার ডুবে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের মোমিনপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, জেলার মতলব উত্তর উপজেলার নদীপথের এক নীরব ঘাতক নৌযান বালুবাহী বাল্কহেড। দিনের বেলায় তো বটেই, রাতে আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে এগুলো। সন্ধ্যার পর নদীপথে বাল্কহেড চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় লাইট বন্ধ রেখে ধীরে ধীরে চালান সুকানিরা। এসব বাল্কহেডের বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
নৌ পুলিশের হিসাবমতে, গত তিন বছরে ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বেপরোয়া বালুবাহী ট্রলার চলাচলের কারণে মেঘনা নদীতে প্রতিদিন পারাপার হওয়া লাখো মানুষের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। কখন দুর্ঘটনার শিকার হয়, এমন আতঙ্কে থাকে নৌকা ও ট্রলারের যাত্রীরা।
বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আইনে আছে রাতে বাল্কহেড ও মালবাহী কার্গো চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু মেঘনায় রাতের বেলায় এসব নৌযান চলাচল করছে। অধিক মুনাফার লোভে মালিকেরা রাতে শ্রমিকদের নৌযান চলাচলে বাধ্য করছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন মোহনপুর, এখলাছপুর খেয়াঘাট দিয়ে ট্রলার ও নৌকায় করে হাজারো মানুষ পারাপার হন। কিন্তু বেপরোয়াভাবে কার্গো, বাল্কহেড চলাচলের কারণে আতঙ্ক নিয়ে খেয়া পারাপার হতে হচ্ছে।
খেয়া পারাপারকারী এক নৌকার মাঝি বলেন, নৌ দুর্ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী বাল্কহেড। বাল্কহেড লোড হয়ে চলাচল করলে পানির সঙ্গে মিশে থাকায় এটাকে দেখা যায় না। আবার এটি দ্রুতগতিতে চলায় দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। বিশেষ করে রাতে বাল্কহেড চলাচল করলে দেখা যায় না।
মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অহিদুজ্জামান বলেন, ‘মেঘনায় সন্ধ্যার পর যাতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বালুবোঝাই বাল্কহেড চলাচল করতে না পারে, আমরা সেদিকে দৃষ্টি রাখছি।’