ঠাকুরগাঁওয়ে দিনে তাপমাত্রা থাকলেও বিকেলের পর থেকে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। এমন আবহাওয়ায় বলে দিচ্ছে শীতের আগমনের কথা। তাইতো শহরের ফুটপাতসহ বিভিন্ন জায়গায় শীতের রস ও পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে গেছে।
জেলার পৌর শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ড, হাজীর মোড়, চৌরাস্তা রোড, সত্যপীর ব্রিজ, টার্মিনাল, সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে সন্ধ্যার সময় থেকে পিঠা বিক্রির দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। অফিসগামী কিংবা বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে দেখা যায় শীতের পিঠার স্বাদ নিতে। অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের জন্যও পছন্দের পিঠা নিয়ে যাচ্ছেন।
মৌসুমি এসব পিঠা বিক্রেতারা অধিকাংশ হতদরিদ্র পরিবারের। বাড়তি আয়ের আশায় রাস্তার পাশে পিঠার পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করেন তাঁরা। এতে এ পিঠা বিক্রি করে কেউ কেউ আয় করেন সারা বছরের সংসার খরচ।
হাজীর মোড় এলাকার মহাসড়কের পাশে চিতই পিঠা বিক্রি করছেন সদর উপজেলার নারগুন পোকাতি গ্রামের হুসনে আরা বেগম। তিনি জানান, প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার মতো আয় হয়। যা তিনি সংসারের জন্য ব্যয় করেন। শীত মৌসুম শেষ হলে তিনি পেশার পরিবর্তন আনেন। পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের মসজিদ মার্কেটের সামনে ১০ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করে আসছেন আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে দোকানে পিঠা বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতের পিঠার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহী বেশি। যে কারণে প্রতিদিন ভালো আয় হচ্ছে। শীতের তীব্রতা যত বৃদ্ধি পাবে ততই পিঠার পরিমাণ বেড়ে যাবে বলে জানান এ বিক্রেতা।
পৌর শহরের হাসপাতাল মোড়ে পিঠা বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে ১০ কেজি চালের গুঁড়া দিয়ে পিঠা তৈরি করে বিক্রি করি। আর সন্ধ্যায় বেচা কেনা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ২৫ কেজি চালের গুঁড়া লাগে।’ তাঁর দোকানের সামনে জটলা করে পিঠা খেতে দেখা গেছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের। এদের মধ্যে কেউ খাচ্ছেন ভাপা, কেউ চিতল। গরম পিঠা মুখে দিতে দিতে নানা আলাপও করতে দেখা গেছে তাঁদের।
শীতের পিঠা উৎসব বাঙালি সংস্কৃতির একটি অংশ জানিয়ে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক মনোতোষ কুমার দে বলেন, শীতকাল আর পিঠা একসূত্রে গাঁথা।