অস্ত্রের ঝলকানি, বারুদের গন্ধ, পিচঢালা পথে ভারী বুটের আওয়াজ, অজস্র চিৎকার, কান্না আর ক্ষতিকর রেডিয়েশনের বাতাসে ছুটে চলা। যুদ্ধ মানেই যেন অমানবিকতার এক জগৎ। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় বারবার ফিরে আসছে এসব চিত্র। শহরের উঁচু উঁচু ভবনে বৃষ্টির মতো এসে পড়ছে ক্ষেপণাস্ত্র। সময়ের এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও ঘনীভূত হচ্ছে সংকট। কবে শেষ হবে এ যুদ্ধ?
যুদ্ধের কুয়াশায় হাতড়ে এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া এখন অসাধ্যসাধনই বলা যায়। এর চেয়ে একটু স্থির হয়ে কল্পনায় ঢুঁ মারা যাক। এই যুদ্ধ থামার সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি দৃশ্যপট তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ: ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ রুশ বাহিনীর হাতে চলে গেলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হয় নিহত হবেন নতুবা রাশিয়ায় বন্দিজীবন কাটাতে হবে কিংবা পালিয়ে যাবেন। দেশটিতে মস্কোপন্থী পুতুল শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এতে দ্রুত শেষ হতে পারে এই যুদ্ধ। তবে এটি অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করবে। ইউক্রেনের ভবিষ্যতের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
দীর্ঘ যুদ্ধ: রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধে এমন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নিম্ন মনোবল এবং দুর্বল রসদসহ রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনে আটকে যেতে পারে। এমনটি হলে তাদের শহর দখলে বিলম্ব হবে। এই সুযোগে পশ্চিমাদের অস্ত্র পেয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। হয়তো বেশি দিন যুদ্ধ চললে রাশিয়া এই যুদ্ধ থামিয়ে দেবে।
ইউরোপিয়ান যুদ্ধ: সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ মোল্দোভা এবং জর্জিয়ায় সেনা পাঠাতে পারে রাশিয়া। পুতিন অভিযোগ করতে পারেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করা একটি পশ্চিমা আগ্রাসনের অংশ। ন্যাটোভুক্ত ইউরোপিয়ান দেশে হামলা চালানোর ঝুঁকি নিতে পারেন পুতিন। এতে ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ বেধে যেতে পারে।
কূটনৈতিক সমাধান: ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করতে এরই মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। যদিও এতে কোনো ফল আসেনি। পুতিন অন্তত আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা মেনে নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। যদি যুদ্ধ পুতিনের জন্য খারাপ হয়, তাহলে এটিকে নেতৃত্বের জন্য বড় হুমকির মনে করতে পারে। আর এতে করে তিনি যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারেন।
পুতিনকে উৎখাত: এটি অসম্ভব বলে মনে হতে পারে। তবে বিশ্ব পরিবর্তন হয়েছে। যদি এই যুদ্ধ রাশিয়ার জন্য ক্ষতির হয়, তাহলে রুশ নাগরিকদের অভ্যুত্থান দেখা যেতে পারে।