চৌদ্দগ্রামে তাহমিনা আক্তার পিনু নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গৃহবধূর বাবার দাবি, তাঁর মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। অপরদিকে শ্বশুরবাড়ির দাবি, পিনু আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা মো. ইউনুস চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ স্বামী ইফতেখারুল আলম মজুমদার রাসেলকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কনকাপৈতের মজুমদারবাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পিনুর বাবা মো. ইউনুস জানান, গত শুক্রবার রাতে স্বামী রাসেল মোবাইল ফোনে জানান, বাড়িতে সমস্যা হয়েছে। তিনি যেন দ্রুত আসেন। বাবা গিয়ে দেখেন, কক্ষে পিনুর লাশ পড়ে আছে। পরে তিনি পুলিশকে খবর দেন। আয়ান নামে পিনুর ১০ মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
ইউনুস অভিযোগ করেন, তিন বছর আগে রাসেলের সঙ্গে পিনুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায় সময় রাসেল যৌতুকের জন্য পিনুকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও রাসেল জান্নাত নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাসেলকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। সম্প্রতি আগের স্ত্রীর সঙ্গে রাসেলের যোগাযোগ করা নিয়ে পিনুর সঙ্গে ঝগড়া হয়।
পিনুর ভাই আবু সালমান রাফি বলেন, পিনুকে রাসেল পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে নাটক সাজিয়েছেন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
গ্রেপ্তারের আগে স্বামী রাসেল বলেন, ‘পিনু পাখার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকতে গেলে ভেতর থেকে আটকানো দেখি। সিসি ক্যামেরায় দেখতে পাই পিনুর লাশ ঝুলছে। ছেলে আয়ান নিচে কান্নাকাটি করছে। পরে দরজা ভেঙে পিনুকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে খাটে শুইয়ে লোকজনকে খবর দেই।’
রাসেলের খালা পিংকি বেগম বলেন, রাসেল দুপুরে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত লাশ দেখেন।
থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে পিনু আত্মহত্যা করেছেন। নির্যাতনের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।