ছিলেন বহু গুণে গুণান্বিত একজন মানুষ। তিনি একাধারে ছিলেন কবি, লেখক, সাংবাদিক, অনুবাদক, সমালোচক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার। ছিলেন শিল্প সমালোচকও।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ে আইজি প্রিজন অফিসে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় হিন্দুরা পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে পাড়ি জমান, আর মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে পূর্ববঙ্গে আসেন। কিন্তু তিনি ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চলে আসেন।
১৯৫৭ সালে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন সন্তোষ গুপ্ত। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় তিনি ‘দৈনিক আজাদ’ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ছিলেন। পরে ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন ‘দৈনিক সংবাদ’-এর সিনিয়র সহকারী সম্পাদক।
দীর্ঘ প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে তিনি আমাদের দেশের সাংবাদিকতা জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। তাঁর লিখিত তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক কলাম ‘অনিরুদ্ধের কলাম’ সেই সময়ের বোদ্ধা পাঠকদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছিল। তাঁর নামে কিংবদন্তি হলো, তাঁর কলাম পড়ে এ দেশের বিভিন্ন ধারার রাজনীতিবিদেরা তাঁদের আন্দোলন-সংগ্রামের কলা-কৌশল নির্ধারণ করতেন। এ থেকে বোঝা যায়, তিনি ছিলেন প্রাজ্ঞ একজন রাজনৈতিক সমালোচক।
১৯৭১ সালে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সাংবাদিকতা পেশায় আসার আগে তিনি বামধারার রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১২ বছর কারাবরণ করতে হয়েছে।
কবিতা, শিল্পকলা, চিত্রকলা, রাজনীতি, সাহিত্য, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ১৮টি গ্রন্থ রয়েছে। এ ছাড়া সম্পাদনা করেছেন বহু গ্রন্থ।
দীর্ঘ কর্মজীবনে রাজনীতি, সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও লেখালেখির মাধ্যমে জীবদ্দশাতেই তিনি আপসহীন এক কীর্তিমান পুরুষ হিসেবে সব মহলের কাছে পরিচিত ও সম্মানিত হয়েছিলেন।
সাংবাদিকতা জগতের পথিকৃৎ বলে পরিচিত এ মানুষটি ১৯২৫ সালের ৯ জানুয়ারি ঝালকাঠির রুনসী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।