টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে জেলা সদর বধ্যভূমির পাশে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হয়। ৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এই কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গণি, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, সিভিল সার্জন আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম, পৌর মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতি, প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।
এ সময় জেলা প্রশাসক আতাউল গণি বলেন, এই স্মৃতি কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু ও টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের অডিও, ভিডিও, যুদ্ধকালীন সময়ের ছবি ও দেশি-বিদেশি পত্রিকা সংরক্ষণ করা হবে। এই ভবনের চতুর্থ তলায় একটি কনফারেন্স রুম থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধ ও ৫২-এর ভাষা আন্দোলনকে সম্মান জানিয়ে চারতলা এই স্মৃতি কেন্দ্রে চারটি স্তম্ভে চার জাতীয় নেতা প্রতিকৃতির মধ্যখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল থাকবে। এখান থেকে বঙ্গবন্ধু ও টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও শিক্ষার্থীরা ধারণা পাবেন।
এর আগে গত ৮ মার্চ ওয়ালটন গ্রুপের অর্থায়নে এই কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে নির্মাণের জন্য টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন ও ওয়ালটনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু নিয়ে কথা হয় বীর বিক্রম আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে টাঙ্গাইলের রয়েছে এক গৌরবময় ইতিহাস। জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল জেলায় একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন করার। আমরা বিভিন্ন সময় এই দাবি নিয়ে কথা বলেছি কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছিল না। এতে আমাদের মনে কিছুটা কষ্ট ছিল।’
বীর বিক্রম আবুল কালাম আরও বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এটা নির্মাণ হলে পরবর্তী প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন করে জানতে পারবে। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন ডকুমেন্ট, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত জিনিসসহ যুদ্ধকালে ব্যবহৃত নানা রকম অস্ত্র সংরক্ষণ হবে এখানে, যা দেখে পরবর্তী প্রজন্ম দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে।’