একটি প্রাচীন আরবি প্রবাদ আছে—‘মরার জন্যই বেঁচে থাকো এবং ভাঙার জন্যই গড়ো’। কারও জীবন আছে মানে তাকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। মৃত্যু হলো ক্ষণস্থায়ী জীবনের শেষ সীমানা। তা পার হয়েই তাকে যাত্রা করতে হয় অনন্তকালের জগতে। এই সীমান্ত পার হওয়ার সময় মানুষ মুখোমুখি হয় কঠিন পরীক্ষার। সে সময় একজনের সঙ্গে অন্যদের কী করণীয়, সে সম্পর্কে চমৎকার নির্দেশনা দিয়েছে ইসলাম।
কোনো ব্যক্তির মধ্যে মৃত্যুর আলামত দেখলে আমাদের করণীয় হলো তাকে কেবলামুখী করে ডান কাত করে শুইয়ে দেওয়া। চিত করে হেলান দিয়ে বসিয়ে রাখাও যেতে পারে। তবে লক্ষ রাখতে হবে, যেন উভয় পা কেবলামুখী থাকে। মাথাও যেন কেবলার দিকে থাকে, তা-ও খেয়াল করতে হবে। এরপর তার সামনে বসে স্বাভাবিক স্বরে কালিমা শাহাদাত পাঠ করা, যেন সে শুনতে পায়। তবে তাকে বলার জন্য জোরাজুরি করা যাবে না। কারণ সে পড়তে অস্বীকার করলে তার ব্যাপারে খারাপ ধারণা সৃষ্টি হতে পারে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (আবু দাউদ)
এই সময়ে সবচেয়ে আন্তরিক ও প্রিয় মানুষজন তার সামনে থাকা উত্তম। কেননা, সেই সময়টায় মানুষের ওপর প্রচণ্ড ভয় ও আতঙ্ক ভর করে। আপনজনেরা সামনে থাকলে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা পাওয়া যায়। তবে মৃত্যুযন্ত্রণা অত্যন্ত ভয়াবহ। তাদের জন্য করণীয় হলো তার সামনে বসে সুরা ইয়াসিন পাঠ করা। মহানবী (সা.) বলেন, ‘কোনো মুমূর্ষু ব্যক্তির সামনে সুরা ইয়াসিন পাঠ করা হলে সে পরিতৃপ্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। তাকে তৃপ্ত অবস্থায় কবরে নামানো হয়। কিয়ামতের দিন তাকে তৃপ্ত অবস্থায় পুনর্জীবিত করা হবে।’ (আবু দাউদ)
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক