হোম > ছাপা সংস্করণ

পোলট্রি খাদ্যের বাড়তি দাম নাভিশ্বাস খামারিদের

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ

হাজীপুর গ্রামের তরুণ মেহেদি হাসান। দেশে চাকরির বাজার খারাপ, তাই শিক্ষাজীবন থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করেন। এখন তিনি পোলট্রি খামারি। গত বছর দুই হাজার ডিম উৎপাদনের জন্য লেয়ার মুরগি পালন করেন তিনি। কিন্তু মুরগির রোগ হওয়ায় ভালো উৎপাদন হয়নি। বড় লোকসান গুনতে হয়েছে তাঁকে। এ বছরও বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আবার দুই হাজার লেয়ার মুরগি পালন করেন তিনি। কিন্তু চলতি মাসে দুই দফায় প্রতি কেজি খাবারে ৪ থেকে সাড়ে ৪ টাকা দাম বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

‘দেশে সরকারি চাকরির সুযোগ খুবই কম। সরকার চাচ্ছে দেশে উদ্যোক্তা তৈরি করতে। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় তা-ও সম্ভব হচ্ছে না; বিশেষে করে পোলট্রি ও ডেইরির ক্ষেত্রে। খাদ্যসহ উৎপাদনমুখী জিনিসের দাম বেড়ে গেলেও উৎপাদিত ডিম, দুধ, মাংসের দামের সঙ্গে কোনো সমন্বয় হয় না। ফলে লোকসান দিতে দিতে উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। সরকারের উচিত এসব বিষয়ে নজর দেওয়া।’ গতকাল মঙ্গলবার বর্ধিত ডেইরি ও পোলট্রি খাদ্যমূল্যের সঙ্গে দুধ, ডিম ও মাংসের মূল্য সমন্বয়ের দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কথাগুলো বলেন মেহেদী হাসান।

তারাগঞ্জ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে (টিডিএফএ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধনে দুই শতাধিক ডেইরি-পোলট্রি খামারি ও পশুপালনকারী অংশ নেন।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার মাধ্যমে বর্ধিত ডেইরি ও পোলট্রি খাদ্যমূল্যের সঙ্গে দুধ, ডিম ও মাংসের মূল্য সমন্বয় করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন।

ফরিদাবাদ গ্রামের মোজাহারুল ইসলাম বড় খামারি। ২০টি গাভির ডেইরি খামার আছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘কল্পনাহীনভাবে গোখাদ্যের দাম বাড়ছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি বস্তা (২৫ কেজি) ১০০ টাকা দাম বেড়েছে। সেই তুলনায় উৎপাদিত দুধের দাম বাড়েনি। এখন লোকসান দিয়ে খামার চালাতে হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে গরু বিক্রি করে গরুকে খাওয়াতে হবে।’

আরেক খামারি মিলন মিয়া বলেন, ‘দেশের লাখ লাখ বেকার তরুণ এই শিল্পের সঙ্গে কাজ করে বেকারত্ব ঘুচিয়েছেন। একজনের খামার দেখে আরেকজন খামার গড়েছেন। সেই অনুপ্রেরণা শেষ হতে চলেছে। খামারিদের ন্যায্যমূল্য দেওয়া হোক। কারণ, খামারে উৎপাদিত ডিম, দুধ, মাংস বিক্রির টাকায় নিজের সংসারের খরচ ও খামারের খরচ চলে। আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই শিল্পে সুনজর দেবেন।’

প্রতিবারের মতো এবার দেড় হাজার ব্রয়লার মুরগি পালন করেন ইকরচালী গ্রামের তরুণ রিফাত প্রামাণিক। তিনি বলেন, ৩০-৩৫ দিনের বেশি মুরগি রাখা যায় না। তখন নিরুপায় হয়ে মুরগি বিক্রি করতে হয়। এ মাসে মুরগি উঠিয়েছেন দেড় হাজার। কাজে সহযোগিতা করার জন্য একটি ছেলে রেখেছেন। চলতি মাসে দুই দফায় প্রতি বস্তা খাবারে ২০০-২৩০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মুরগি উৎপাদনে ব্যয় ১২০ টাকা। এই অবস্থায় মুরগি বিক্রি করলে তাঁকে লোকসান গুনতে হবে।

তারাগঞ্জ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, বাজারে এমনিতেই নিত্যপণ্যের দাম চড়া। হাটবাজারে সরকারি তেমন তদারকি নেই। এর ওপর গোখাদ্য, মুরগির খাদ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এক মাসে ডেইরি ও পোলট্রিশিল্পের খাদ্য, মেডিসিন ও খামারে ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। সেই তুলনায় খামারে উৎপাদিত দুধ, ডিম, মাংসের দাম না বাড়ায় খামারিরা প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাঁরা এ শিল্প থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। এতে বেকারত্ব বাড়ছে। খামারিদের রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ