সবশেষ ঈদ সাতক্ষীরার বাড়িতে করেছেন কবে?
প্রশ্নটার উত্তর দিতে বেশ বেগই পেতে হলো মোস্তাফিজুর রহমানকে। একটু ভেবে বললেন, ‘যে বছরে করোনায় সব বন্ধ হয়ে গেল, আমরা সবাই বাড়িতে চলে গেলাম।’ ২০২০ সালে রোজা আর কোরবানির ঈদ বাড়িতে করার সুযোগ হয়েছিল। এরপর একটা লম্বা বিরতি পড়ে গেছে মোস্তাফিজের।
এবার রোজার ঈদে বাংলাদেশের সব পেশাদার ক্রিকেটার ভালো একটা ছুটি পেয়েছেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সুপার লিগ শুরু হওয়ার আগে প্রায় দুই সপ্তাহের বন্ধ থাকছে। আন্তর্জাতিক সিরিজও নেই বাংলাদেশ দলের। এ বিরতি কাজে লাগাতে ঢাকার বাইরের বেশিরভাগ ক্রিকেটার চলে গেছেন বাড়িতে। কেউ কেউ অবশ্য দেশের বাইরেও আছেন।
জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে শুধু মোস্তাফিজের প্রেক্ষাপটই আলাদা। এবারও তাঁর ঈদ করা হচ্ছে না বাড়িতে। এ নিয়ে টানা পাঁচটি ঈদ তাঁকে করতে হচ্ছে আত্মীয়-পরিজন থেকে দূরে থেকে। দুই দিন আগে দিল্লি থেকে গত আড়াই বছরের পাঁচটি ঈদের বর্ণনা ফোনে এভাবে দিচ্ছিলেন মোস্তাফিজ, ‘২০২১ সালে রোজার ঈদটা বাড়িতে করার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আইপিএল থেকে ফিরে কোয়ারেনটিন করতে সোনারগাঁ হোটেলে বন্দি থাকতে হলো। ওই বছর কোরবানির ঈদ করলাম জিম্বাবুয়েতে। গত বছর রোজার ঈদ করলাম ভারতে, আইপিএল নিয়ে ব্যস্ত থাকায়। কোরবানির ঈদ হলো জাতীয় দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে।’
এবারের ঈদও ভারতে করতে হচ্ছে মোস্তাফিজকে। দিল্লির হয়ে আইপিএল খেলা বাংলাদেশি পেসারকে ঈদের দিন থাকতে হতে পারে হায়দরাবাদে। সোমবার সেখানেই হায়দরাবাদের সঙ্গে মোস্তাফিজের দিল্লির ম্যাচ। টানা দেশের বাইরে ঈদ করতে করতে মোস্তাফিজও যেন একটু ক্লান্ত। পেশাদারি খোলস থেকে বেরিয়ে এসে বলেই ফেলেন, ‘যতদিন খেলব, এমনই জীবন আমাদের। চিল যদি করতে হয়, খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর করতে হবে। সারা জীবন তো আর খেলা থাকবে না।’
মোস্তাফিজের কিছুটা স্বস্তি, সঙ্গে স্ত্রী সামিয়া পারভীন শিমুকে পাচ্ছেন এবারও। ফিজের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীকেও অভ্যস্ত হতে হচ্ছে এমন যাযাবর জীবনের সঙ্গে। এ বাস্তবতা মেনে নিতেই স্ত্রীকে মোস্তাফিজের পরামর্শ, ‘তাকেও অভ্যাস করতে হবে, কী আর করা।’
খেলার জন্য কত শহরেই থাকতে হয় মোস্তাফিজকে। কিন্তু শহর কখনোই টানে না তাঁকে। বিরতি পেলেই ছুটে যান সাতক্ষীরায় নিজের সবুজ-শান্ত গ্রামে; যেটি তাঁর সবচেয়ে ‘কমফোর্ট জোন’। সেই ফিজকে টানা ঈদ করতে হচ্ছে বাড়ি থেকে দূরে থেকে। খেলার জন্য অবশ্য এসব ত্যাগ স্বীকার করতে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। মাঠের পারফরম্যান্সেই ভুলে থাকতে চান সব গৃহকাতরতা। এবারের আইপিএলে এখনো চেনা ছন্দে দেখা যায়নি মোস্তাফিজকে। দুর্দান্ত খেলতে পারলেই তাঁর মনে খেলে যাবে ঈদের মতো আনন্দ।