বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে জুমের পর এবার আমন কাটার ধুম পড়েছে। পাহাড়ের ঝিরি, খাল ও নদীর তীর ছাড়াও ছোট ছোট বিলে ধান কাটছেন নারী-পুরুষেরা। এবার উপজেলায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
গত সোমবার বিকেলে সোনাইছড়ির এলাকায় ধান কাটায় ব্যস্ত মিমি চাকমা বলেন, নারী হলেও তাঁরা ঘরে বসে থাকেন না। ধান কাটা, জুমচাষ, নবান্ন উৎসবের পিঠাপুলি বানানোসহ সব কাজ তারা করে থাকেন।
উপজেলার ৫ ইউনিয়নের শত শত নারী-পুরুষ ধান কাটাসহ সব কাজ একসঙ্গে করছেন। কয়েকদিন ধরে পাহাড়ি-বাঙালি পাড়ায় এখন নতুন ধানের উৎসব শুরু হয়েছে।
তুলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাস্টার ইদ্রিস জানান, সীমান্ত উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়িতে আমন কাটার ধুম পড়েছে। পাহাড়ি নারীরাও নেমেছে ধান খেতে। কেউ ধান কাটছেন, কেউবা খোলায় ধান মাড়াই করছেন।
স্কুল শিক্ষক ইদ্রিস জানান, ষড়ঋতুর মধ্যে চতুর্থ ঋতু হেমন্ত কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস নিয়ে গঠিত। এ ঋতুতেই হয় নবান্ন উৎসব। পাহাড়িরা এটি ঘটা করে পালন করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হক বলেন, এবার নাইক্ষ্যংছড়িতে ৩ হাজার ৪৪১ হেক্টর হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে। মাঠজুড়ে সোনালি ধানের ছড়াছড়ি। দিগন্ত জোড়া মাঠ সেজেছে হলুদ-সবুজ রঙে। বিলের কোথাও ধান কাটা শুরু হয়েছে, কোথাও আবার ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষক। সপ্তাহ ব্যবধানে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। এবারও বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন তিনি।
কৃষি কর্মকর্তা ইনামুল হক বলেন জানান, গত বছর সরকারি খাদ্য গুদামে প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা হারে বিক্রি করেছিলেন কৃষকেরা। এবার এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কৃষকেরা ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন।
কৃষক চাইহ্লা মং মারমা, মোহাগ তঞ্চঙ্গ্যা, ও আমির আলী সহ অনেকই জানান, তারা ধানের ন্যায্য মূল্য চান শুধু।