জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বাবা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন পীর মাহমুদ, আজুলি খাতুন, মর্জিনা বেগম, সোমা বেগম, আমেনা বেগম ও পারভিন। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি বলে তিনি জানান। মামলা পেলে আটককৃতদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
এদিকে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শুক্রবার সকালে দাফন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের চরবৈশিং গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সৌদিপ্রবাসী আজিজের সঙ্গে তাঁর ভাই আজাহারের বাড়ির সামনের রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। জমির বিরোধ মীমাংসা করতে দুই মাস আগে সৌদি থেকে বাড়িতে ফেরেন আজিজ।
জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সহোদর আজাহার আলী ও তাঁর জামাতা মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কয়েকদিন ধরে আব্দুল আজিজের শত্রুতা চরম আকার ধারণ করে। এর জের ধরে খুন হন আব্দুল আজিজ ও মেয়ে জান্নাত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই পরিবারের একজন সদস্য বলেন, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় নিখোঁজের পরও তাঁরা থানায় অভিযোগ দিতে পারেননি। গত বৃহস্পতিবার লাশ উদ্ধার করা হলেও একই কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারছেন না তাঁরা। আজাহার আলী ও মোহাম্মদ আলী পক্ষের বাবু মিয়া, আব্দুর রশিদ ও তার ছেলে সাগর মিয়া একটি মামলায় গত ২৩ মার্চ গ্রেপ্তার হন।
কয়েকদিন কারাভোগের পর গত মঙ্গলবার জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন তাঁরা। বাড়ি ফেরার পর রাতেই তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে খোরশেদ আলম ও আব্দুল আজিজের বাড়িঘরে হামলা চালায়।
অবস্থা বেগতিক দেখে আব্দুল আজিজ তাঁর একমাত্র মেয়ে জান্নাতকে (৪) নিয়ে ঝিনাই নদী পার হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে গত বৃহস্পতিবার নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের স্ত্রী রোজিনা বেগম বলেন, ‘প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তাঁরা এখনো মামলা করতে পারেননি। তাঁর স্বামী মেয়েকে নিয়ে নদী পার হওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ধরে তাদের হত্যা করে লাশ নদীতে ফেল দেয়।’
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ মামলা দেয়নি। মামলা দিলে আটককৃতদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।