আমের জন্য বিখ্যাত রাজশাহী। এই অঞ্চলে আমের পাশাপাশি উৎপাদিত হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফল। স্থানীয় চাষিদের পাশাপাশি ফল উৎপাদের এগিয়ে আসছেন তরুণ উদ্যোক্তারাও। তবে, উৎপাদিত ফল সংরক্ষণ করার জন্য কোনো সংরক্ষণাগার নেই এই জেলায়। ফলে চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত ফল নিয়ে বিপাকে পড়েন চাষিরা। তখন অনেক চাষি বাধ্য হয়ে লোকসানে সেসব বিক্রি করে দেন। তবে, আশার কথা হলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে তিনটি মিনি ফল সংরক্ষণাগার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর একটি চলতি মসেই চালু হওয়ার কথা।
পুঠিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন নাহার ভূঁইয়া বলেন, ফল সংরক্ষণাগারগুলো হবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ, নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম এবং রাজশাহীর পুঠিয়ায়। চার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিটি মিনি ফল সংরক্ষণাগার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। এই সংরক্ষণাগারগুলোতে ৪ থেকে ১৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রায় ৩০ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন ফল রাখা যাবে। পুঠিয়ার শিবপুরহাট এলাকায় স্থাপিত সংরক্ষণাগারটির নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস গত আমের মৌসুমে এটা চালু করতে চেয়েছিল। তবে যথাসময়ে বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাই চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন সবকিছু প্রস্তুত আছে, যেকোনো সময় চালু করা হবে।
উপজেলার সফল চাষি ও ধোকড়াকুল কলেজের প্রভাষক মুন্সি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আম রাজশাহী অঞ্চলের উৎপাদিত প্রধান ফল। সম্প্রতি মাল্টা, ড্রাগনসহ বিভিন্ন বিদেশি ফল এ এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে অতিরিক্ত ফলগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে বাধ্য হয়ে চাষিরা নামমাত্র মূল্যে উৎপাদিত ফলগুলো বাজারজাত করেন। সম্প্রতি কৃষি বিভাগ পুঠিয়ায় একটি মিনি ফল সংরক্ষণাগার স্থাপন করেছে—যা স্থানীয় ফলচাষিদের জন্য সুসংবাদ।
রাজশাহী কৃষি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক ড. হাসান উজ্জামান বলেন, রাজশাহী জেলার মধ্যে প্রথম পুঠিয়াতে পাইলট প্রকল্পে একটি মিনি ফল সংরক্ষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় চাষিরা আম, ড্রাগন, গাজরসহ বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। সংরক্ষণাগারটি চলতি মাসের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার কথা।