বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে নবগঠিত কমিটির করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করলেও পদবঞ্চিত নেতাদের অভিযোগ এখনো তদন্ত করছে পুলিশ।
তদন্তে অভিযোগটির সত্যতা মিললে সেটিও মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম। উভয় পক্ষের অভিযোগে আসামি করা হয়েছে মোট ৯৬ জনকে।
নবগঠিত কমিটির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় একই সংগঠনের পদবঞ্চিত ৫২ নেতা-কর্মীকে মামলার আসামি করা হয়েছে।জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা বাদী হয়ে গত রোববার রাতে মামলাটি করেন।
এই মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় যে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত তৌহিদুর রহমান তৌহিদ, সিদ্ধার্থ কুমার দাস, নূর মোহাম্মদ সাগর, মাহফুজার রহমান, আল ইমরান হোসেন ও জাকিউল ইসলামের নাম রয়েছে। তৌহিদ, সিদ্ধার্থ ও সাগর ঘোষিত কমিটির সহসভাপতি, মাহফুজ যুগ্ম সম্পাদক, ইমরান সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জনি বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজ শাখার সভাপতি।
এর আগে গত শনিবার রাতের সংঘর্ষের ঘটনার পর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সুজিত কুমার দাস এবং গাবতলী উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর বিপ্লবকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নবগঠিত জেলা কমিটি। জেলা কমিটির সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন। যদিও সুজিত ও বিপ্লব পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে দাবি করেছেন, তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার কোনো এখতিয়ার এই কমিটির নেই।
ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহার করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত শনিবার রাতে অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে তাঁরা ক্যাম্পাসে পৌঁছার আগে থেকেই আসামিরা সেখানে ওত পেতে ছিলেন। তাঁদের ক্যাম্পাসে দেখার পর আসামিরা গালাগালি শুরু করেন।
এতে নিষেধ করায় তাঁরা লাঠিসোঁটা এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। হামলায় জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান, বগুড়া পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাব্বিরসহ কয়েকজন আহত হন। এ সময় তাঁদের বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
ওই সংঘর্ষের পর পুরান বগুড়া এলাকায় পদবঞ্চিতদের কয়েকটি ছাত্রাবাসে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলার বিষয়ে রয়্যাল ছাত্রাবাসে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী জোবায়ের সরকার বিপ্লব বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে জেলা ছাত্রলীগর নবগঠিত কমিটির সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়, সহসভাপতি আতিকুর রহমানসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মারপিটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী জোবায়ের সরকার বলেন, ‘আমাদের ছাত্রাবাস ভাঙচুর করে মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখনো সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি। তদন্তের নামে টালবাহানা করা হচ্ছে।’ বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম জানান, সজীব সাহার করা অভিযোগটি থানায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিপ্লব বাদী হয়ে যে অভিযোগ দিয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে সেটিও মামলা হিসেবে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে নবগঠিত কমিটির করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করলেও পদবঞ্চিত নেতাদের অভিযোগ এখনো তদন্ত করছে পুলিশ।নথিভুক্ত করা হবে।