ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুরের প্রয়াত নারী ফুটবলার সাবিনার পরিবারের অভাব-অনটন কমেনি। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তার মা ও ভাইদের। মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল সাবিনাকে নিয়ে; কিন্তু সে স্বপ্ন পূর্ণতা পায়নি। তিন দিনের জ্বরে ভুগে ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মারা যায় কিশোরী ফুটবলার সাবিনা।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় সাবিনা প্রথম অংশ নিয়েছিল। এরপর সে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৪ দলের প্রাথমিক ক্যাম্পে প্রথম ডাক পায়। সে বছর ডিসেম্বরে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতা সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় মেয়েদের দলে ডাক পেয়েছিল সাবিনা; কিন্তু আর খেলা হয়নি তার।
সাবিনার বাবা সেলিম মিয়া মারা যাওয়ার পর তিন ভাই-বোনকে নিয়ে মা ফজিলা খাতুন অভাবে দিন কাটান। বড় বোনের বিয়ে হয়ে যায়। ভাই সবার ছোট।
সাবিনা কলসিন্দুরের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সাবিনা থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দলের প্রাথমিক ক্যাম্পে ছিল।
কলসিন্দুরের কোচ জুয়েল মিয়া বলেন, ‘সাফের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিল সাবিনা। ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথাও ছিল তার। আমরা একজন সম্ভাবনাময়ী ফুটবলারকে হারিয়েছিলাম। অল্প বয়সে তার মৃত্যুতে আমাদের কলসিন্দুরের জনগণ অনেক কষ্ট পেয়েছিল।’
প্রয়াত এই কিশোরী খুদে ফুটবলার সাবিনার মা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মেয়ে সাবিনাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমাদের। আমার মেয়ে বেঁচে থাকলে এখন ভালো খেলোয়াড় হতে পারত। আমার মেয়েও কলসিন্দুরের হয়ে দেশের সুনাম বয়ে আনত।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আমাকে করে দিয়েছিলেন। তা থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা পাই। সেই টাকায় কোনোমতে দিন পার করছি। আমার নিজের কোনো জমি নেই। ভাইয়ের বাড়িতে থাকি।’
কলসিন্দুর নারী ফুটবল দলের ম্যানেজার মালা রাণী সরকার বলেন, সাবিনা খুব ভালো ফুটবলার ছিল। তার পরিবারের খোঁজখবর নিয়মিত রাখা হয়।