হোম > ছাপা সংস্করণ

গাছ কেটে ৪৮ বছর পার

১৬ বছর বয়স থেকে খেজুরগাছ কেটে রস সংগ্রহ এবং গুড় তৈরি শুরু করেন আনসার বিশ্বাস। সেই থেকে জীবনের ৪৮ বছর কেটে গেছে গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে। এখন তাঁর বয়স ৬৪। আনার বিশ্বাসের সঙ্গে সে সময় গ্রামের আরও ১২-১৪ জন গাছি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনি এবং তবিবর রহমান ছাড়া বাকি সবাই গত হয়েছেন। তবে গ্রামের কেউ আর এই পেশায় আসেননি।

ফলে এ দুজনই খেজুরগাছ কাটা পেশা হিসেবে ধরে রেখেছেন গ্রামটিতে। এবারও বৃদ্ধ বয়সে রস সংগ্রহে নেমে পড়েছেন গাছি আনসার বিশ্বাস। সুস্থ থাকলে বাকি জীবন খেজুরের রস-গুড় সংগ্রহের সঙ্গেই থাকতে চান তিনি।

আনসার বিশ্বাসের বাড়ি যশোরের মনিরামপুরের কাটাখালি গ্রামে। ভিটেমাটি না থাকায় আগে এ গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন তিনি। এখন ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত হাজরাইলের মুক্তেশ্বরী পাড়ের আশ্রয়ণ পল্লির বাসিন্দা তিনি। এখানে থেকে নিয়মিত খেজুরগাছ কেটে রস সংগ্রহ করে আসছেন আনসার বিশ্বাস। কাচা রস বিক্রি এবং রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে দিনে তাঁর আয় ১ হাজার টাকা। শীত এলে বছরে পাঁচ মাস তিনি ব্যস্ত থাকেন এ কাজে।

আনসার বিশ্বাসের এক ছেলে। তিনি বাবার পেশাকে ধারণ না করে পাট কলে কাজ করেন। খেজুরগাছ থেকে পড়ে যাওয়ার ভয়ে তিনি এ কাজ শেখেননি। আনসার বিশ্বাস মূলত গাছি হলেও গরমকালে তিনি হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকেন না। এ সময় তিনি গরুর ব্যবসা করে সংসার চালান।

আনসার বিশ্বাস বলেন, ‘যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙা গ্রামের আজিরদ্দি আমার ওস্তাদ। তাঁর কাছে আমি খেজুরগাছ কাটা শিখিছি। ১৬ বছর বয়স থেকে গাছ কাটার কাজ করি। বহু বছর তাঁর কাছে ছিলাম। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাঁড় পোড়ানো, খেজুরগাছ কেটে রস বের করা, গাছে উঠে রস সংগ্রহের কাজ করতাম। দিনে ৮০টি গাছ কাটতাম। এখন অত পারিনে।’

প্রবীণ এই গাছি বলেন, ‘এ বছর দেড় কুড়ি (১২০ টি) গাছ কাটার কাজ নিছি। বৃষ্টি বাদে সপ্তাহে প্রতিদিন ২৪টি করে গাছ কাটি। ৭-৮ ভাঁড় রস পাই। রস জ্বালিয়ে পাটালি বানাই। প্রতিকেজি পাটালি ২৫০ টাকায় বিক্রি করি। এ ছাড়া প্রতি ভাঁড় কাচা রসের দাম ১৫০ টাকা।’

আনসার বিশ্বাস বলেন, ‘এখন খুব শীত। রস বেশি হচ্ছে। রস-গুড় বিক্রি করে দিনে ১ হাজার টাকা আয় আছে। এভাবে বৈশাখের প্রথম দিন পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ করব। এর পর গরুর ব্যবসায় লেগে যাব। গরমে সেই কাজ করে সংসার চলবে।’

এ গাছি বলেন, ‘আমরা ১২-১৪ জন একসঙ্গে খেজুর গাছ কাটতাম। তাঁরা সবাই মারা গেছেন। তবিবর নামে একজন বেঁচে আছেন। তিনও এ পেশা ধরে রেখেছেন। আমরা দুজনে মরে গেলি গ্রামে আর খেজুর গাছ কাটার লোক থাকবে না। আমাদের ছেলেরা এ কাজ শেখেনি। পড়ে যাওয়ার ভয়ে তাঁরা খেজুর গাছে উঠতে চায় না। এ কাজ শিখে রাখেনি কেউ। আমার ছেলে ইমরান পাটকলে কাজ করে। সে খেজুর গাছ কাটতে রাজি না।’

মনিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, ‘গাছিদের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি একটি প্রকল্প আছে। মনিরামপুরে এর কার্যক্রম চালু হয়নি। প্রকল্পটি চালু হলে নতুন নতুন গাছি তৈরি হবে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ