হিজরি সনের রবিউস সানি মাসের ১১ তারিখ বড়পীর আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর ওফাত দিবস। এটিকে ফাতিহা-ই-ইয়াজদহম বলা হয়। ফাতিহা অর্থ সুরা ফাতিহাসহ বিভিন্ন দোয়া-দরুদ পড়া, ইয়াজদহম অর্থ এগারো। মূলত তাঁর সুফিবাদ ও আত্মশুদ্ধির শিক্ষা জীবনে ধারণ করে আল্লাহর কাছের বান্দা হওয়ার জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা।
আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) আল্লাহর ওলি ছিলেন। প্রতিটি ওলির মূল দর্শন হলো আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করা এবং নিজেকে অন্যের কল্যাণে নিয়োজিত করা। ১৫টির বেশি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। তাঁর প্রতিটি গ্রন্থে সুফিবাদ ও আত্মশুদ্ধির বিষয় বর্ণিত হয়েছে। কারণ, আত্মা পরিশুদ্ধ থাকলে মানুষ সুচারুরূপে দায়িত্ব পালন করতে পারে এবং অন্যের হক নষ্ট করে না। আর যারা আত্মা শুদ্ধ রাখে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলকাম হয়।
আল্লাহ বলেন, ‘স্থায়ী জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আর এটা হলো তাদের পুরস্কার—যারা তাদের আত্মা শুদ্ধ করে।’ (সুরা তোহা: ৭৬)। তিনি আরও বলেন, ‘নিঃসন্দেহে সে সফলকাম হয়েছে, যে তা শুদ্ধ করেছে এবং সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তা কলুষিত করেছে।’ (সুরা শামস: ৯-১০)। তিনি আরও বলেন, ‘অবশ্যই সে সফলতা লাভ করবে, যে আত্মশুদ্ধি অবলম্বন করবে।’ (সুরা আলা/ ১৪)।
হাদিসে আত্মশুদ্ধির ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কেননা, আত্মশুদ্ধির সঙ্গে শারীরিক সুস্থতার সম্পর্ক খুবই নিবিড়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘সাবধান! শরীরের মধ্যে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। তা যখন সুস্থ থাকে তখন পুরো শরীর সুস্থ থাকে। আর তা যখন অসুস্থ হয়ে যায় তখন পুরো শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। সাবধান! তা হলো তোমাদের হৃৎপিণ্ড।’ (বুখারি)
লেখক: ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান, অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়