টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরা চলা হিজাববিরোধী বিক্ষোভের মুখে ‘নৈতিকতা পুলিশ’ বিলুপ্তি ঘোষণা করল ইরান। হিজাব আইন সংস্কারের ইঙ্গিত দেওয়ার পরদিনই এ ঘোষণা এল। গতকাল রোববার এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজরি বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের সঙ্গে নৈতিকতা পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এ বাহিনী বিলোপ করা হয়েছে।’ গতকাল একটি ধর্মীয় সভায় অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি নৈতিকতা পুলিশ কেন বিলুপ্ত হচ্ছে না, এমন প্রশ্ন করলে জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
স্বতন্ত্র পুলিশ বাহিনী হিসেবে ‘নৈতিকতা পুলিশকে’ আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয় ইরানের কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট আহমেদিনাজেদের শাসনামলে।
ইরানে নারীদের বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরা-সংক্রান্ত আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে সংসদ ও বিচার বিভাগ কাজ করছে বলে গত শনিবার জানান মনতাজরি। বিদ্যমান আইন সংস্কারের ইঙ্গিত দিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘সংবিধান বাস্তবায়নের পদ্ধতি রয়েছে, যা নমনীয় হতে পারে।’
এরপরই গতকাল নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ বিলোপের ঘোষণাটি এল।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল কুর্দিস্তান প্রদেশের সাকেজ থেকে রাজধানী তেহরানে আসেন। ‘সঠিকভাবে হিজাব না পরার’ অভিযোগে দেশটির নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ মাহসাকে আটক করে। তিন দিন পর পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবি করে ইরানের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ চলছে। এদিকে, আন্দোলন রুখতে দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর কঠোর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে গত শনিবার প্রথমবারের মতো স্বীকার করল দেশটির সরকার।