হোম > ছাপা সংস্করণ

সড়ক তো নয় যেন চাতাল

হোসাইন আহমদ, শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ)

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে গ্রামীণ ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলছে ধান ও খড় শুকানোর কাজ। এতে সড়কগুলো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে যানবাহনের চালক ও সচেতন ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন।

কৃষকেরা জানান, বৃষ্টি ও বন্যায় উপজেলার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা প্লাবিত হয়ে যায়। এ সময় কেটে রাখা ধানে পচন ধরে ও অঙ্কুর গজিয়ে যায় মাড়াই করা ভেজা ধানে। এতে ধান শুকানো নিয়ে বিপাকে পড়েন কৃষকেরা। ফলে গ্রামীণ সড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কই ধান শুকানোর একমাত্র ভরসা তাঁদের। 
উপজেলার সদরপুর এলাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাগলা এলাকা পর্যন্ত দেখা যায়, মহাসড়কের দুপাশে ধান ও খড় শুকানোর হিড়িক পড়েছে। নারী-পুরুষের পাশাপাশি পরিবারের ছোট সদস্যরাও এ কাজে লেগে পড়েছে।  

উপজেলার সদরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সবুর সন্তানদের নিয়ে মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে ধান শুকানোর কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘১৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। বন্যার পানিতে তলিয়েছে অনেক জমির ধান। কিছু ধান কেটে আনলেও শুকাতে না পেরে অঙ্কুর গজিয়েছিল। উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে মহাসড়কেই ধান শুকাচ্ছি। বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমছে, খেতের পানি কমলে ধান কাটতে পারব আশা করি।’

মহাসড়কের ওপর রোদ পড়লেই অল্প সময়ে তপ্ত হয়ে ওঠে। এতে ধান দ্রুত শুকায়। তা ছাড়া মহাসড়কে ত্রিপল ছাড়াই ধান শুকাতে দেওয়া যায়। এসব সুবিধার কথা ভেবে কৃষকেরা মহাসড়ককে ধান শুকানোর জন্য বেছে নিয়েছেন। তবে এতে যান চলাচলে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। কৃষকদের সাময়িক অসুবিধার কথা চিন্তা করে দুর্ভোগ মেনে নিচ্ছেন পথচারীরা।

পথচারীরা জানান, সড়কগুলো দেখলে মনে হয় ধান শুকানোর চাতাল। সড়কের অর্ধেক দখল করে চলছে এ কার্যক্রম। অনেকটাই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে অনেক পথচারী জানান, লোকালয় থেকে বন্যার পানি না নামায় ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। অনেকটা নিরুপায় হয়েই তাঁরা সড়কে ধান শুকাতে এসেছেন। 
একইভাবে মহাসড়কে ধান ও খড় শুকানোর কাজ করছেন আস্তমা গ্রামের কৃষক নমিজ আলী। তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে ধান শুকানো অন্যায়, সেটা আমরা জানি। কিন্তু সবকিছু পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকটা নিরুপায় হয়ে ঝুঁকির মধ্যেও ধান শুকাচ্ছি। ঘরে ধান না উঠলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’

এভাবে মহাসড়কে ধান ও খড় শুকানোর কাজ করছেন আরও অনেক কৃষক। তাঁদের সবার ভাষ্য একই, বন্যায় সব প্লাবিত হওয়ায় সড়কে ধান শুকাচ্ছেন তাঁরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরে শান্তিগঞ্জ উপজেলার ২২ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসলের মধ্যে হাওর এলাকার সব ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষকেরা। তবে আকস্মিক বন্যার কারণে হাওরের উঁচু এলাকায় কিছু জমির ফসল তলিয়ে ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করেছি। তাঁদের সহায়তা করা হবে।’  

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দী মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তাদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া বন্যায় যাঁদের ঘরবাড়ি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ঘর মেরামতের জন্য টিন দেওয়ার জন্য তালিকা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার উজ জামান।

ইউএনও বলেন, ‘আমরা বন্যাদুর্গতদের পাশে আছি। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকেও পানিবন্দী মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন বিতরণ ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।’ 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ