রাজৈর উপজেলার হোসেনপুরের ভ্যানচালক সালাম শেখ (৪৮) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। দুই খুনের মামলা থেকে রেহাই পেতে ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই ভ্যানচালক সালামকে কুপিয়ে হত্যা করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জেল হোসেন চুন্নু মাতুব্বর, হেমায়েত শেখসহ তাঁদের সহযোগীরা। হত্যার পর সালাম শেখের অভিভাবক সেজে হেমায়েত শেখ নিজেই বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ৪১ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় মামলা করেন।
তবে পুলিশের দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওই ৪১ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সালাম হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জেল হোসেন চুন্নু মাতুব্বরকে ১ নম্বর ও বাদী হেমায়েত শেখসহ ১৩ জনকে আসামি করে ২০ নভেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি ভোরে রাজৈর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর গ্রামে জুলফিকার আলী ও বাবুল মুন্সীসহ কয়েকজন স্থানীয় মসজিদে ফজরের নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে জুলফিকার আলী ও বাবুল মুন্সীর ওপর হামলা চালান। এতে জুলফিকার আলী ও বাবুল মুন্সী নিহত হন। এই দুই খুনে ৮৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। তবে দীর্ঘ তদন্ত শেষে মাদারীপুর সিআইডি পুলিশ-৮৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়।
সালাম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবুল কাওছার জানান, দুই খুনের মামলা থেকে রেহাই পেতে চলতি বছরের ২৩ মে রাত ৯টার দিকে পরিকল্পিতভাবে সালামকে হত্যা করা হয়। ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ভ্যানচালক সালামকে কৌশলে নির্জনস্থান কবিরাজপুর হোসেনপুর সড়কের বাইরপুকুর পাড়ে নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মোফাজ্জেল হোসেন চুন্নু, আয়নাল শেখ ও হেমায়েতসহ তাঁদের সহযোগীরা কুপিয়ে সালামকে ফেলে রেখে যান। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
রাজৈর থানার ওসি শেখ সাদিক বলেন, ‘সালাম হত্যার রহস্য উন্মোচনে সফল হয়েছি। দুই খুনের মামলা থেকে রেহাই পেতে ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই হোসেনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চুন্নু, হেমায়েত ও আয়নাল গংরা পরিকল্পিতভাবে সালামকে হত্যা করে।’