পীরগাছায় এক সময়ের প্রমত্তা তিস্তায় জেগে ওঠা ধু-ধু বালুচরে এখন সবুজের সমারোহ। যে নদীতে ছিল উত্তাল ঢেউ, সেখানে তৈরি হয়েছে নানা ফসলের খেত। তিস্তার বুক চিরে জাগা চরে কৃষকেরা ফলাচ্ছেন বিভিন্ন রকম ফসল।
পানিশূন্য তিস্তা নদী বর্তমানে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপ নিয়েছে। বালুচরে যে জমি নিয়ে কৃষকেরা ছিলেন দিশেহারা, সে জমিতে এখন সোনা ফলছে। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছেন উপজেলার তিস্তা পাড়ের কৃষকেরা।
ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বালুচরে আলু, বাদাম, ডাল, মরিচ, বেগুন, শিম, কপি, পেঁয়াজ, রসুন ছাড়াও শ শ হেক্টর জমিতে বোনা হচ্ছে বিভিন্ন জাতের ভুট্টা। এ যেন এক সবুজের সমারোহ। এ ছাড়া শাকসবজিতে ভরা গোটা বালুচর। কৃষকেরা নানা রকম ফসলের খেতে নিড়ানি, কীটনাশক প্রয়োগ ও সেচ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির চাকা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
কথা হয় শিবদেব ভক্তের বাজার এলাকার কৃষক আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, তিস্তার নদীর পানি শুকিয়ে গেছে, তাই বালুচরে চাষাবাদ করে এলাকার কৃষকেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
কৃষিশ্রমিক আমিনুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি পেলে দুঃখের শেষ থাকে না আমাদের। আমরা পানিতে গরিব, ভাটায় বড় লোক। এখন দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা মজুরিতে কাজ করছি। সংসারে তেমন কোনো অভাব নাই। কাজ লেগেই আছে।’
ছাওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন জানান, কয়েক বছর আগেও চরাঞ্চলের মানুষের অভাবের অন্ত ছিল না। এখন আর তাঁদের তেমন অভাব নেই। চরাঞ্চল থেকে প্রতিদিন নানা ধরনের কৃষিপণ্য বাইরে সরবরাহ করছেন কৃষকেরা। এখন কৃষিভিত্তিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠছে চরাঞ্চল।
এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম বলেন, চরাঞ্চলে ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কৃষকেরা আর বেকার থাকছেন না। তাঁরা পতিত জমিগুলো কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।