দখল ও দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে মধুপুরের বংশাই নদ। বাসাবাড়ি ও হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্যে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে একসময়ের স্রোতস্বিনী বংশাই। অথচ একসময় মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে ধরা হতো এই নদকে।
দখলের কবলে পড়ে সংকুচিত হয়ে ছোট নালায় পরিণত হয়েছে বংশাই। এ ছাড়া অবৈধভাবে দখল করে বাসাবাড়ি নির্মাণ করার ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি।
আশির দশকেও অবহেলিত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে পাহাড়ি অঞ্চলের ফসল আনারস, কাঁঠাল নৌকায় মধুপুর হাটে আনা হতো। এই খরস্রোতা নদ এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে বংশাই নদের মধুপুর পৌরসভার অংশ ঘুরে দেখা যায়, কাইতকাই থেকে শুরু করে চাড়ালজানি পর্যন্ত অংশে দখলদাররা বেপরোয়া। নিজেদের খেয়াল খুশিমতো নদ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাঁরা। কেউ পয়োনিষ্কাশনের ট্যাংক বানিয়েছেন। কেউ ট্যাংকের নালা যুক্ত করেছেন বংশাই নদে। বহুতল ভবন বানিয়েছেন নদীর তলদেশ পর্যন্ত পিলার স্থাপন করে। কেউ নদের গতিপথ পরিবর্তন করে জায়গা দখলে মেতে উঠেছেন।
অপরদিকে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন ব্রিজের দুধারই ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। রাতের বেলায় হোটেল শ্রমিকেরা দইয়ের হাঁড়ি থেকে শুরু করে সমস্ত ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলেন। সড়কের ঝাড়ুদাররাও ময়লা আবর্জনা ফেলেন বংশাই নদে।
নদী পারের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, এখন নদের পানি দুর্গন্ধ ছড়ায়। রোগ বালাই হয়।
মধুপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘মধুপুরের কিছু অসাধু লোক বংশাই নদের পরিবেশ দূষিত করে চলছেন।’
পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন টাঙ্গাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক আহমেদুল হক সিদ্দিকী রতন বলেন, নদীর ৩২ ফুট পর্যন্ত যে কোনো স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেন, ভাইঘাট থেকে চাড়ালজানি পর্যন্ত নদের দুই ধারে জরিপ করে দখলদার চিহ্নিত করা হবে। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।