গরিব ঘরের সন্তান কামরুল ইসলাম। ভাগ্য বদলানোর আশায় ২০০১ সালে কুমিল্লা থেকে চলে আসেন রাজধানী ঢাকায়। উপার্জনের জন্য শুরু করেন রিকশা চালানো। ২০১৬ সালের দিকে এফডিসিতে শুটিংয়ের মালামাল আনা-নেওয়ার কাজ পেয়ে যান কামরুল। এতে ভাগ্যের চাকা ঠিকঠাক ঘুরছে না বলেই মনে হতো তাঁর। অর্থের লোভে একপর্যায়ে এই রিকশাচালক নিজেই প্রতিষ্ঠা করেন ড্যান্স ক্লাব। হয়ে ওঠেন ডিজে কামরুল। তরুণীদের নাচ-গান শেখানোর আড়ালে ঠেলে দেন অনৈতিক কাজে। ভারতে নাচ-গান কিংবা ভালো চাকরির প্রলোভন দিয়ে অনৈতিক কাজে শুরু করেন নারী পাচারও।
গতকাল শনিবার র্যাব-৪-এর কার্যালয়ে কামরুলের উত্থানের কাহিনি তুলে ধরেন র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, তেজগাঁও এবং চুয়াডাঙ্গা থেকে পাচার হওয়ার সময় ২৩ নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ভারতে পাচার চক্রের প্রধান অভিযুক্ত কামরুলসহ পৃথক চক্রের ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার অন্য ব্যক্তিরা হলেন কামরুলের সহযোগী রিপন মোল্লা, আসাদুজ্জামান সেলিম, নাইমুর রহমান। মধ্যপ্রাচ্যে নারী পাচার চক্রের সদস্য নুর নবী ভূঁইয়া রানা, আবুল বাশার, আল ইমরান, মনিরুজ্জামান, শহিদ শিকদার, প্রমোদ চন্দ্র দাস ও টোকন। অভিযানে ৫৩টি পাসপোর্ট, ২০টি মোবাইল, বিদেশি মদ, ২৩ ক্যান বিয়ার ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, কামরুলের মাধ্যমে এক নারীর ভারতে পাচারের ঘটনায় তাঁর বোন বাড্ডা থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় ২০১৯ সালের মাঝামাঝি পুলিশ তাঁকে আটক করে। তিন মাস পর কারাগার থেকে বের হয়ে ফের জড়িয়ে পড়েন নারী পাচারে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে পাচার চক্রের আরও ১০-১২ জনের নাম পেয়েছি আমরা। তাদেরও ধরা হবে।