দেশে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ না থাকায় বছরের শেষদিকে দেখা দেয় পেঁয়াজের সংকট। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কুষ্টিয়াতে চাষ করা হচ্ছে নতুন জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ। এই জাতের পেঁয়াজ চাষে প্রণোদনা দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রণোদনা পাওয়ায় কুষ্টিয়ায় কৃষকেরাও এ পেঁয়াজ চাষে বেশ আগ্রহী হয়েছেন।
কৃষকেরা জানান, মূলকাটা ও দানার জাতের পেঁয়াজের মধ্যবর্তী সময়ে এই পেঁয়াজ তুলতে পারবেন তাঁরা। উচ্চ ফলনশীল এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকেরা যেমন লাভের স্বপ্ন দেখছেন তেমনি এই আবাদে সফল হলে জাতীয় চাহিদার যে ঘাটতি তা মিটিয়ে পেঁয়াজের বাজারে এক অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে পেয়াজের সংকট কমাতে কুষ্টিয়ায় বিএডিসি নাসিক এন-৫৩ নামের নতুন জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ শুরু হচ্ছে। সরকারি প্রণোদনার আওতায় বীজতলা তৈরি করেছেন জেলার কৃষকেরা।
কুষ্টিয়ায় ১ হাজার ২০০ জন কৃষককে এক বিঘা করে জমিতে এই পেঁয়াজ চাষ করতে ১ কেজি করে বীজ, ৪০ কেজি সার, কীটনাশক, বীজতলা তৈরির পলিথিনসহ অন্য উপকরণ ও নগদ ২ হাজার ৮০০ করে টাকা দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই সময় আমরা সাধারণত পেঁয়াজের আবাদ করি না। কারণ এই সময় বৃষ্টিতে পেঁয়াজের চারা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবং তাঁদের নির্দেশনায় এবারে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ করছি। যদি ভালো ফলন পাই তাহলে সামনের মৌসুম থেকে নিজ উদ্যোগেই এ পেঁয়াজ আবাদ করব।’
জানতে চাইলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিষ্ণু পদ সাহা বলেন, ‘আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে কোনো পেঁয়াজের আবাদ হয় না। যার কারণে বছর শেষে আমাদের পেঁয়াজের বড় একটা ঘাটতি থেকে যায়। এই ঘাটতি মেটানোর জন্যই মূলত এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপপরিচালক ড. হায়াত মাহামুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উচ্চ ফলনশীল এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকেরা যেমন লাভবান হবেন। তেমনি দেশের এই সময়ের পেঁয়াজ এর ঘাটতি মেটাতে বড় ভূমিকা রাখবে।’