মিঠাপুকুরে ভ্যানচালক মিয়াজান আলীকে হত্যার পর তাঁর জানাজায় অংশ নিয়েছিল কিশোর খুনিরা। গ্রেপ্তার দুই অভিযুক্তের বরাত দিয়ে পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বুধবার উপজেলার রামেশ্বরপুর ও কাশিমপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মিয়াজানের ছিনতাই হওয়া ভ্যান ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ব্যাটারিচালিত ভ্যানের চালক মিয়াজান ২০ জানুয়ারি নিখোঁজ হন। পরের দিন সকালে রামেশ্বরপুর গ্রামের আমবাগানে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী রোমেনা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।
মামলার পরই তদন্ত শুরু করে থানা-পুলিশ। একপর্যায়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক এনামুল হকের নেতৃত্বে গত বুধবার রামেশ্বরপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক মিয়াজানের মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মাফলার জব্দ করা হয়।
ওই কিশোর জানায়, ঘটনার সঙ্গে আরও দুজন জড়িত ছিল। এই তথ্যমতে কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আরেক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে মিয়াজানের ছিনতাই হওয়া ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি জব্দ করে পুলিশ।
দুই কিশোর জানায়, কাশিমপুর গ্রামের বুলবুল আহম্মেদের পরামর্শে হাত খরচের টাকা সংগ্রহ করার জন্যই তিনজনে মিলে মিয়াজানকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন জানান, দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অপর আসামি বুলবুলকে এখনো ধরা সম্ভব হয়নি।
সহকারী পুলিশ সুপার (ডি সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি মিয়াজান হত্যা মামলাটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। ফলে মাত্র ১২ দিনেই রহস্য উদ্ঘাটন এবং ছিনতাই হওয়া ভ্যান ও মোবাইল উদ্ধারসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।
কামরুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার দুজন ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের হাত খরচের টাকা ছিল না। আসামি বুলবুল প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে দিতে চেয়ে ভ্যান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন।