২০১৬ সালে নোয়াখালীতে তিন খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এই দাবি জানানো হয়।
জানা গেছে, ঘটনার দিন দুপুর ২টার দিকে মামলার অভিযুক্ত ৪ নম্বর আসামি সৌরভ নোয়াখালী সরকারি পুরোনো কলেজ হোস্টেলের পুকুরে কুকুরকে গোসল করাচ্ছিলেন। এ সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবক আনোয়ারের সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন সন্ধ্যায় উভয় পক্ষে সালিশি বৈঠক ডাকা হয়। আনোয়ারের পক্ষ নিয়ে সালিশি বৈঠকে যান তাঁর বন্ধু ফজলে হুদা রাজিব ও ওয়াসিম। বৈঠক চলাকালে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাজু, সুলতান, সৌরভ, বাপ্পিসহ একদল সন্ত্রাসী আনোয়ার রাজিব, ওয়াসিম ও ইয়াছিনের ওপর হামলা চালায়।
হামলাকারীরা প্রথমে হকিস্টিক, লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তাদের আহত করে। পরে সাজু তাঁর সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে রাজিবকে গুলি করে। এ সময় রাজিবকে উদ্ধার করতে গেলে সুলতান গুলি করেন ওয়াসিমকে আর সৌরভ গুলি করেন ইয়াছিনকে। পরে অনেকগুলো ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিবকে মৃত ঘোষণা করেন। অবস্থার অবনতি হলে ওয়াসিম ও ইয়াছিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁদের দুজনেরও মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত ফজলে হুদা রাজিবের মা কামরুন নাহার বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় আদালতে আরও দুটি মামলা করা হয়। যেখানে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত মামলার ৭ নম্বর আসামি ফয়সাল মাহমুদ রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপর আসামিরা দেশে ও দেশের বাইরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তারে কোনো ভূমিকাই নিচ্ছে না।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা তিন খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী বিশেষ জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এমদাদ হোসেন কৈশোর বলেন, মামলাটির সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাদীর সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। একজন আসামি ছাড়া সবাই পলাতক রয়েছেন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি বলেন, ২০১৭ সালের ৩১ মে এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জসিম উদ্দিন। যেহেতু ঘটনাটি অনেক আগের, তাই এ বিষয়ে খবর নিতে হবে।