দুই দশকের যুদ্ধ শেষে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আফগান ত্যাগের বিশৃঙ্খল ফ্লাইট প্রক্রিয়ার নানা অজানা কাহিনি ধীরে ধীরে প্রকাশ হচ্ছে। এতে আনন্দ-বিষাদের অনেক ঘটনাই জানা যাচ্ছে। হাজার হাজার মানুষের মতো দেশ ছাড়তে পাঁচ সন্তান ও স্ত্রী সুরাইয়াকে নিয়ে ১৯ আগস্ট কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে ভিড় করেছিলেন মির্জা আলি আহমাদি।
প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে এগোতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল তাঁদের। এ অবস্থায় বিমানবন্দরের একটি গেটের কাছাকাছি আসার পর দেওয়ালের ওপরে পাহারায় থাকা এক মার্কিন সেনা তাঁদের সাহায্যের দরকার আছে কি না, জানতে চান। এ রকম প্রস্তাব শুনে মুহূর্তেই দুই মাসের শিশু সোহাইলকে সেনাটির হাতে দেন মির্জা আলি।
পরবর্তী সময়ে তিনি জানান, ‘তখন খুব ভিড়। ভিড় ঠেলে দুই মাসের সোহাইলকে নিয়ে এগোনো বেশ কঠিন ছিল। তাই ভাবলাম, আমরা তো গেটের কাছেই চলে এসেছি। সোহাইলকে এদিকে দিয়ে দিলে, দেওয়ালের ওপারে বা বিমানবন্দরের ভেতরে একটু পরই তো তাকে পাব।’
কিন্তু তাঁদের ঢুকতে প্রায় আধঘণ্টা দেরি হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রায় তিন মাস পার হতে চললেও খোঁজ মেলেনি শিশুটির। মার্কিন সেনা, সাধারণ কর্মকর্তাসহ সম্ভাব্য সবার কাছে সোহাইলের খোঁজে ধরনা দিয়েছে কাবুলের মার্কিন দূতাবাসে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে ১০ বছর কাজ করা মির্জা আলি। কিন্তু কেউ সোহাইলের সন্ধান দিতে পারেননি।
বাকি চার সন্তান ও স্ত্রী সুরাইয়াকে নিয়ে বর্তমানে টেক্সাসের ‘ফোর্ট ব্লিস’-এ অন্য আফগান উদ্বাস্তুদের সঙ্গে অবস্থান করছেন মির্জা আলি। ইতিমধ্যে মার্কিন প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিভাগের কাছে নিখোঁজ সোহাইলের বিষয়ে আলাপ করেছেন তিনি। তারাও একটা কিছু জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। মা সুরাইয়াও মনে করেন, আল্লাহ চাইলে, একদিন ফিরবে নিখোঁজ সোহাইল।