পদ্মার বিস্তীর্ণ চর জুড়ে শুধুই টমেটো খেত। দীর্ঘদিন ধরে রাজবাড়ী সদর আর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার বিস্তীর্ণ চর জুড়ে বিভিন্ন জাতের টমেটোর আবাদ হয়ে আসছে। তবে এ বছর পচন রোগে খেতের অনেক টমেটো পচে যাচ্ছে। ফলে লোকসানের শঙ্কায় আছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগ বলছে, পচন রোগ ঠেকাতে নিয়মিত ছত্রাকনাশক ওষুধ দিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
রাজবাড়ীতে বিউটি ফুল, বিপুল প্লাস, বিগল ও মিন্টু সুপার ইত্যাদি উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর আবাদ হচ্ছে। বিঘা প্রতি ফলন হয় ১৫০ থেকে ২০০ মণ। তাই এই এলাকার কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে চরের জমিতে টমেটো আবাদ করছেন। টমেটো আবাদ লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর আবাদ বাড়ছে। এই জেলায় উৎপাদিত টমেটো রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি হয়।
সরেজমিনে সদর উপজেলার উড়াকান্দা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টমেটোখেতে পচন রোগ ধরায় অনেক টমেটো পচে যাচ্ছে। কৃষকেরা খেত থেকে পচা টমেটো ফেলে গাছ থেকে পাকা টমেটো ছিঁড়ে ঝুড়িতে রাখছেন। পুরুষের পাশাপাশি বাড়ির নারীরাও টমেটো তুলছেন।
ওই এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি এ বছর চার বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ করেছেন। এক বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ করতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলন ভালো হলে ১০০ থেকে ১৫০ মণ টমেটো পাওয়া যায়। তবে এ বছর খেতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত লোকসান হতেও পারে। তবে বর্তমানে যে বাজার দর আছে তা থাকলে কিছুটা লাভ হবে।
আরেক কৃষক মন্তাজ শেখ বলেন, অসময়ে বৃষ্টির কারণে টমেটোখেতে এই রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে গাছেই টমেটো পচে যাচ্ছে। রোগ ঠেকাতে ওষুধ ছিটিয়েছেন, তাতেও কাজ হচ্ছে না। রোগের প্রকোপ না কমলে এবার লোকসান গুনতে হবে।
হালিমা খাতুন বলেন, এ বছর তাঁর বাবা তিন বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। ফলও ভালো হয়েছে। শুরুতে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছেন। বর্তমানে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এই দাম থাকলে লোকসান হবে না।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম শহীদ নূর আকবর বলেন, জেলায় এ বছর ৭৯৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে যে বৃষ্টিপাত হয়েছিল তার জন্য টমেটোখেতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগ থেকে টমেটো রক্ষার জন্য ছত্রাকনাশক ওষুধ ছিটানোর পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।